হিলি: বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত বাণিজ্য নিয়ে ফের জট। তবে এবার অবশ্য দু’দেশের কূটনৈতিক কোনও কারণের জেরে সমস্যা তৈরি হয়নি। হয়েছে, প্রতিবেশী দেশের অভ্যন্তরীণ গোলযোগের জন্য। বাংলাদেশের কাস্টমস কর্তাদের আন্দোলনের জেরে ব্যাহত হল হিলি স্থলবন্দরের রপ্তানির ব্যবসা। রবিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বন্ধ ছিল ভারত থেকে পণ্য রপ্তানি। যদিও বিকেলের পরে ব্যবসা স্বাভাবিক হয়। ভারতের ব্যবসায়ী মহল জানিয়েছে, এদিন বাণিজ্য বন্ধের জেরে এদেশের ব্যবসায়ী মহলে বিশেষ প্রভাব পড়েনি। মূলত ওপারের ব্যবসায়ীরাই আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
বাংলাদেশের রাজস্ব আদায় প্রক্রিয়াকে তদারকি সরকার সংস্কার করতেই প্রতিবাদে সরব হয়েছে সরকারি সংস্থাগুলি। তার জেরেই কলম বিরতি আন্দোলন শুরু করেছেন রাজস্ব কর্তারা। তারই প্রভাব পড়ল রপ্তানি বাণিজ্যে।
হিলি স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানি শুরু হয়। রবিবার সকালেও সেইমতো রপ্তানি ব্যবসার জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়। কিন্তু বাংলাদেশের তরফে কাস্টমস কর্তাদের পেনডাউনের বার্তা বন্দরে ছড়িয়ে পড়তেই ব্যবসার প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায়। সকাল থেকে ভারতীয় সময় বিকেল ৪.৩০ মিনিট পর্যন্ত বন্দরের বাণিজ্য কার্যক্রমের প্রক্রিয়ায় কাস্টমস কর্তারা পেনডাউন ঘোষণা করেন। প্রতিবেশী দেশের কাস্টমস কর্তাদের আন্দোলনের জেরে শনিবার দুপুরেও ৩ ঘণ্টা বাণিজ্য ব্যাহত হয়েছিল। তারপরে এদিনের আন্দোলনে ফের তা ব্যাহত হল।
বাংলাদেশে মুহাম্মদ ইউনূস পরিচালিত তদারকি সরকার রাজস্ব আদায় নীতি সংস্কারের কাজ শুরু করেছে। আর তার প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করেছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। বাংলাদেশের সমস্ত রাজস্ব প্রতিষ্ঠানে আন্দোলন শুরু হয়েছে। হিলি স্থলবন্দরে সেদেশের শুল্ক দপ্তরের কর্তারা শনিবার দুপুরে ৩ ঘণ্টা পেনডাউন ঘোষণা করে আন্দোলন শুরু করেছিলেন। রবিবার সকাল থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত (বাংলাদেশের সময় অনুযায়ী) ফের সেই আন্দোলনের পথেই হাঁটেন তাঁরা। তার জেরেই ওই বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পণ্য রপ্তানি ব্যাহত হয়। সামনেই ইদুজ্জোহা বা বকরিদ রয়েছে। উৎসবের মরশুমের আগে এভাবে রপ্তানি ব্যাহত হওয়ায় ভারতের তেমন ক্ষতি না হলেও মশলা আমদানি করা নিয়ে বড় ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
এ প্রসঙ্গে হিলি ব্যবসায়ী সংগঠনের সহ সভাপতি রাজেশকুমার আগরওয়াল বলেন, ‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যায় সেদেশের কাস্টমস কর্তারা আন্দোলন শুরু করেছেন। তার জেরে শনিবার দুপুরে ৩ ঘণ্টা ব্যবসা বন্ধ ছিল। এদিন সকাল থেকে বিকেল ৪.৩০ মিনিট পর্যন্ত ব্যবসা বন্ধ। এখন তো রপ্তানি খুবই কম হচ্ছে। তাই আমাদের তেমন কোনও ক্ষতি হবে না। ঘণ্টাখানেকেই সমস্ত রপ্তানির পণ্যবোঝাই গাড়ি ওপারে চলে যাবে।’