হরিশ্চন্দ্রপুরঃ উপস্থিতি নামমাত্র হলেও মিড-ডে মিলে ভুয়ো উপস্থিতি দেখিয়ে প্রতিমাসে বিল করা হচ্ছে। এমনই অভিযোগ উঠেছে হরিশ্চন্দ্রপুর দু’নম্বর ব্লকের ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ফতেপুর জুনিয়র হাইস্কুলের বিরুদ্ধে। শুধু ভুয়ো তালিকা তৈরিই নয়, অভিযোগ ছাত্র-ছাত্রীদের পাশাপাশি উপস্থিতি নিয়মিত স্কুলে আসেন না শিক্ষকদের একাংশও। স্কুলের এই অনিয়ম নিয়ে ক্ষুব্ধ অভিভাবকমহল।
জানা গিয়েছে, হরিশ্চন্দ্রপুর দু’নম্বর ব্লকের ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ফতেপুর জুনিয়র হাইস্কুলের। এই বিদ্যালয়ে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ানো হয়। কিন্তু বিদ্যালয়ে কোনও শিক্ষক নেই। তাই পার্শ্ববর্তী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষক তুলে এনে কোনওরকমে পঠনপাঠন সহ অন্যান্য কাজকর্ম চলছে এই জুনিয়র হাই স্কুলের। এই বিদ্যালয়ে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে হাজিরা কম থাকা সত্ত্বেও বেশি বেশি করে ছাত্র-ছাত্রীর উপস্থিতি দেখিয়ে মিড ডে মিলের টাকা নয় ছয় করছেন শিক্ষকরা। ভুয়ো তথ্য পাঠানো হচ্ছে মিড-ডে মিলের অ্যাপস এর মাধ্যমে।
পাশাপাশি শিক্ষকরা নিয়মিত আসেন না বলে অভিযোগ। এমনকি পড়াশোনার মান নিচে নেমে গিয়েছে। এই যাবতীয় অভিযোগ তুলে শুক্রবার ফতেপুর জুনিয়র হাই স্কুলে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় অভিভাবকরা। অভিভাবকদের বক্তব্য স্কুলে স্থায়ী শিক্ষক নেই। যারা আছেন তারাও নিয়মিত আসেন না স্কুলে। মিড ডে মিল নিয়ে লাগাম ছাড়া দুর্নীতি করছেন শিক্ষকরা। এই নিয়ে বারবার স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়ে কোনও কাজ হয়নি। তাই তারা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।
স্থানীয় অভিভাবক জীবনকৃষ্ণ পাল বলেন, ‘স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী আসছে ৫০ জন থেকে ১০০ জন। অথচ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক ২০০ এর উপরে মিড-ডে মিলের রিপোর্ট করছেন। আমার প্রশ্ন হল তাহলে বাকি টাকা যাচ্ছে কোথায়? ঠিকমতো পড়াশোনা হচ্ছে না এখন।’
আরেক অভিভাবক নারায়ণ মণ্ডল বলেন, ‘আমার ছেলে এই স্কুলের অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে। বিদ্যালয় নিয়মিত শিক্ষক না থাকায় অন্য স্কুল থেকে শিক্ষক নিয়ে এসে এখানে কাজ চালানো হচ্ছে। ঠিকমতো পড়াশোনা হচ্ছে না ছাত্রছাত্রীরা বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বারবার আমরা স্থানীয় শিক্ষা দপ্তরকে জানিয়েছি, কিন্তু কোন কাজ হয়নি।’
যদিও অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অরিন্দম পোদ্দার। তার বক্তব্য, ‘পার্শ্ববর্তী ফতেপুর প্রাইমারি এবং মনিপুর প্রাইমারি থেকে শিক্ষক নিয়েছে বিদ্যালয় চলছে। আমরা নিয়ম মেনেই মিড ডে মিল এবং অন্যান্য কাজকর্ম করছি।’ যদিও তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ কে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। যদিও সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ে পরিদর্শকের দাবি অভিযোগ জমা করলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।