হরিশ্চন্দ্রপুর: ভুয়ো নথিকাণ্ডে এবার নাম জড়াল তৃণমূল জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ রবিউল ইসলামের। তাঁর বিরুদ্ধে এই বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূলের রাহেনা সুলতানা। এই নিয়ে হাইকোর্টে তিনি ও কয়েকজন মামলাও রুজু করেন। রাহেনার আরও অভিযোগ রবিউল ইসলাম এখন তদন্তে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করছেন। ওবিসি শংসাপত্র বাতিল হওয়ার পর থেকে তাদেরকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আতঙ্কে বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। তারা পুলিশি নিরাপত্তার দাবি তুলেছেন। বিস্ফোরক অভিযোগ সামনে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক।
হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত রশিদাবাদ পঞ্চায়েতের প্রধান লাভলি খাতুন। গত পঞ্চায়েত ভোটে কংগ্রেসের প্রতীকে জয়লাভ করলেও দলবদল করে তৃণমূলের সমর্থনে প্রধান হন। পরবর্তীতে রেহেনা সুলতানা সহ আরও চারজন বিচারপতি অমৃতা সিনহার ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের করেন। মামলাকারীদের অভিযোগ ছিল লাভলি খাতুন বাংলাদেশের নাগরিক। এখানে বিয়ে করে জাল নথিপত্র ব্যবহার করে প্রধান হয়েছেন। কোর্টের নির্দেশে এই ঘটনা নিয়ে দুইবার শুনানি করেন মহকুমা শাসক সৌভিক মুখার্জি। সেই শুনানিতে তার ওবিসি শংসাপত্রের জন্য ব্যবহার করা সাক্ষীদের নাম, বাবার নাম এবং এলাকার নাম নিয়ে অসংগতি উঠে আসে। অভিযোগ একজনকে ভুয়ো বাবা বানিয়ে ছিলেন তিনি। তারপরে লাভলির ওবিসি শংসাপত্র বাতিল হয়ে যায়। এরপরেই তার বাংলাদেশের নাগরিকত্বের অভিযোগ আরও জোরালো হয়ে ওঠে। প্রধান পদ থেকে তাঁকে অপসারণের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। এর মাঝেই বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন তৃণমূলের রাহেনা সুলতানা।
অভিযোগ প্রসঙ্গে শাসকদলের জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রবিউল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘রেহেনা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে। লাভলি গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রার্থী ছিল। কংগ্রেসের নেতারাই ওর সার্টিফিকেট তৈরি করে। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার পিছনে বড় কোনও ষড়যন্ত্র রয়েছে। নিরপেক্ষ তদন্ত করলে সমস্ত কিছু বেরিয়ে আসবে।’
যদিও পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের মক্রম আলি বলেন, ‘আইন আইনের পথে চলছে।’ বিজেপি নেতা কিষান কেদীয়া বলেন, ‘এর পিছনে বড় মাথা আছে। সিবিআই তদন্ত হলে সব বেরিয়ে আসবে।’ কংগ্রেস মুখপাত্র আবদুস সোবহানের দাবি, ‘তৃণমূলের লোকেরাই ওর জাল সার্টিফিকেট বের করতে মদত দিয়েছে।’ এদিকে এ বিষয়ে লাভলি খাতুনকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।