হরিশ্চন্দ্রপুর: রাজস্থানে মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুরের (Harishchandrapur) পরিযায়ী শ্রমিকদের (Migrant employees) বাংলাদেশি তকমা দিয়ে আটক করে হেনস্তার অভিযোগ উঠল সেখানকার পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, বৈধ কাগজপত্র দেখানো সত্ত্বেও তাঁদের পরিবার নিয়ে রাজস্থান (Rajasthan) ছেড়ে পশ্চিমবঙ্গে ফিরে যাওয়ার চাপ দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তাঁদের নিরাপত্তা এবং কর্মসংস্থান সুনিশ্চিতের জন্য এই রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবারের লোকজন। ইতিমধ্যেই হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নম্বর ব্লকের কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের বোহর গ্রামের প্রায় ৪০ জন পরিযায়ী শ্রমিক রাজস্থানের জয়পুরে কর্মরত। সেখানে কেউ সাফাইকর্মী, কেউ বর্জ্য সংগ্রহকারী, কেউ চুল ফেরি করেন, আবার কেউ হোটেলে কাজ করেন। এদের মধ্যেই ১৪ জনকে বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করে সেখানকার পুলিশ প্রশাসন। এরপর সারাদিন বসিয়ে রাখা হয় থানায়। পরবর্তীতে নির্দিষ্ট বৈধ কাগজ এবং পরিচয়পত্র দেখানোর পর ছাড়া পান তাঁরা। কিন্তু অভিযোগ, তাঁদের ক্রমাগত হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এমনকি রাজস্থান ছেড়ে দিতে বলা হচ্ছে।
এদিন ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবারের লোকদের সঙ্গে নিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় যান তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য স্বপন আলি। পরিবারের লোকেরা লিখিতভাবে পুলিশকে বিষয়টি জানান। তাঁদের দাবি, পশ্চিমবঙ্গে কোনও কাজ না থাকায় ভিনরাজ্যে যেতে হচ্ছে। কিন্তু ভারতীয় হওয়া সত্ত্বেও সেখানে গিয়ে এই ধরনের হেনস্তার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এরাজ্যে ফিরলে কোনও কাজ পাবেন না। তাই সেখানেই যাতে তাঁরা কাজ করতে পারেন এই দাবিতে পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন পরিবারের লোকজনেরা। এলাকার এক শ্রমিকের আত্মীয় শেখ মেরাজুল বলেন, ‘আমাদের আত্মীয়স্বজন সব রাজস্থানে আছে। এখন শুনতে পাচ্ছি ওঁদেরকে বাংলাদেশি সন্দেহে এলাকার মানুষ বিভিন্নভাবে নির্যাতন চালাচ্ছে। ওই এলাকার পুলিশকে বলেও কিছু হচ্ছে না। আমরা আমাদের পরিবার নিয়ে ভীষণ চিন্তায় আছি।’
হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা স্বপন আলি বলেন, ‘ভারতবর্ষের যে কোনও রাজ্যের বাসিন্দা অন্য রাজ্যে গিয়ে কাজ করতে পারেন। কিন্তু কাশ্মীরের ঘটনার পর আমরা লক্ষ্য করছি বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে। তাই আমরা তাঁদের নিরাপত্তার দাবিতে এলাকার থানার মাধ্যমে রাজস্থান পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করব।’ বিজেপির উত্তর মালদা সাংগঠনিক সম্পাদক রুপেশ আগরওয়াল বলেন, ‘প্রয়োজন হলে আমরা সাংসদ খগেন মুর্মুর সাহায্য নেব। ওই রাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর যাতে কোনওরকম নির্যাতন না হয় সেই চেষ্টা চালানো হবে।’ এপ্রসঙ্গে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ রাজস্থান পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করার আশ্বাস দিয়েছে।