হরিশ্চন্দ্রপুরঃ গত শুক্রবার হরিশ্চন্দ্রপুর কলেজে প্রথম সিমেস্টার পরীক্ষা চলছিল। এই কলেজে সিট পড়েছিল চাঁচল কলেজের। অভিযোগ, পরীক্ষা চলাকালীন বেঞ্চের লেখা থেকে খাতায় নকল করছিল এক ছাত্র। সেটি দেখতে পেয়ে পরীক্ষার হলে কর্তব্যরত শিক্ষক ওই ছাত্রের খাতা ১০ মিনিট আটকে রাখেন। আর এই ঘটনার জেরেই গত সোমবার বিকেলে হরিশ্চন্দ্রপুর কলেজের অধ্যক্ষ ড: সুমিত নন্দীর অফিসে সদলবলে হানা দেওয়ার অভিযোগ উঠে তৃণমূল ছাত্রপরিষদের নেতা বিমান ঝাঁ-এর বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় কলেজ অধ্যক্ষ থানায় অভিযোগ দায়ের না করলেও ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মালদা জেলাশাসক।
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ষষ্ঠ সিমেস্টারের পরীক্ষা চলছে। হরিশ্চন্দ্রপুরের পিপলা কলেজে শুক্রবার পরীক্ষা চলাকালীন এক ছাত্রকে বেঞ্চের লেখা থেকে টুকলি করতে দেখেন কর্তব্যরত এক অধ্যাপক। তিনি গিয়ে ওই ছাত্রের খাতা কেড়ে নিয়ে দশ মিনিট খাতা আটকে রাখেন। কেন ওই ছাত্রের খাতা আটকে রাখা হল, তার কৈফিয়ত চাইতে সোমবার বিকেলে বিমান ঝাঁ সাত-আট জনকে সঙ্গে নিয়ে কলেজে আসে। কলেজের অধ্যক্ষ ডঃ সুমিত নন্দীর ঘরে গিয়ে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন। অধ্যক্ষ বারবার বোঝানোর চেষ্টা করলেও কিছুতেই দমেনি ওই ছাত্র নেতা। অধ্যক্ষের সঙ্গে রীতিমতো দুর্ব্যবহার করে হুমকি দিয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে যান বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় অধ্যক্ষ সহ কলেজের অন্যান্য কর্মীরা আতঙ্কে রয়েছে।
এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন অধ্যক্ষ সুমিত নন্দী। তাঁর বক্তব্য, তাঁর বাড়ি অনেক দূরে। এই এলাকায় তিনি একাই থাকেন। স্বাভাবিক ভাবে ছাত্রনেতা দলবল নিয়ে যে ধরনের কথা বলে গেছেন তা নিয়ে তিনি আতঙ্কিত। এতকিছুর পড়েও তিনি চাননা অভিযুক্ত ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে। অভিযুক্তের সঙ্গে বসে বিষয়টি মিটিয়ে নিতে চান।
যদিও ছাত্রনেতা বিমান ঝা-এর বক্তব্য, ‘অধ্যক্ষ ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছেন। আমি কোন দুর্ব্যবহার করিনি। বিনা কারণে ওই ছাত্রের খাতা কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। ওই ছাত্র পড়াশোনা যথেষ্ট ভালো ও কোনও নকল করেনি। তাছাড়া ওই প্রিন্সিপাল নিজেই দুর্নীতিপরায়ন। কলেজে নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে। কলেজের পরীক্ষায় হাই স্কুল শিক্ষকরা গার্ড দিচ্ছেন কেন? কলেজের অনেক অধ্যাপক দিনের পর দিন না এসে অধ্যক্ষের মদতে খাতায় সই করে দেন।’ যদিও ছাত্রনেতার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলেই মন্তব্য করেছেন অধ্যক্ষ সুমিত নন্দী।