হরিশ্চন্দ্রপুর: এক মাস আগেই হরিশ্চন্দ্রপুরে (Harishchandrapur) প্রশাসনিক বৈঠক করতে এসে ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকদের এলাকায় সরকারি জমি দখলমুক্ত করতে বুলডোজার চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন মালদার জেলাশাসক নিতিন সিংহানিয়া। কিন্তু কার্যত সেই নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে যে এলাকায় সরকারি জমি কেনাবেচা হচ্ছে, তা আরও একবার প্রকাশ্যে এল। শনিবার দুপুরে জমি নিয়ে তৃণমূলের দুই পক্ষের বিবাদকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র পরিস্থিতি তৈরি হয় হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এবং হাসপাতাল চত্বরে। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয় বিশাল পুলিশবাহিনী।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হরিশ্চন্দ্রপুরের গাঙ্গর গ্রামে রাস্তার ধারের আট কাঠা জমি নিয়ে এই বিবাদের সূত্রপাত। কয়েক মাস ধরেই ওই এলাকার মজিবুর রহমানের সঙ্গে শারফরাজ আলমের ওই জমি নিয়ে সমস্যা চলছিল। মজিবুরের অভিযোগ, তাঁরা ওই জমি কিনলেও শারফারাজরা তা দখল করার চেষ্টা করছে। এই নিয়ে প্রথমে এদিন এলাকায় তাঁর দোকানে গিয়ে চড়াও হয় অপরপক্ষ। মজিবুরকে মারধর করে বলেও অভিযোগ।
এরপরই হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগ জানাতে গেলে থানার সামনেও দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গণ্ডগোল সৃষ্টি হয়। সেখানেই মারধর চলাকালীন বৃদ্ধ মজিবুরের কান কেটে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে শারফরাজদের বিরুদ্ধে। এরপর তাঁকে সেখান থেকে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে গেলে সেখানেও ধুন্ধুমার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। শেষে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। এই ঘটনায় দুই পক্ষের মোট পাঁচজন আহত হয়েছে। দুই পক্ষই তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি।
তৃণমূলের মদতেই জমি মাফিয়াদের বাড়বাড়ন্ত বলে অভিযোগ বিরোধীদের। এপ্রসঙ্গে জেলা বিজেপি সম্পাদক রূপেশ আগরওয়াল বলেন, ‘এক তৃণমূল আরেক তৃণমূলের মাটি দখল করছে। এটা এখন পশ্চিমবঙ্গে সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। যতদিন এই সরকার রাজ্যে থাকবে, ততদিন মাটি লুট হবে, মায়ের কোল শূন্য হবে। এই সরকার থাকলে এধরনের ঘটনা ঘটতেই থাকবে।’
তবে এই ঘটনায় তৃণমূলের কোনও যোগ নেই বলেই দাবি তৃণমূল ব্লক সভাপতি জিয়াউর রহমানের। তিনি বলেন, ‘দু’পক্ষের কেউ তৃণমূল করে বলে আমার জানা নেই। তবে যদি দলের কেউ এতে জড়িত থাকেনও তাহলে প্রশাসনের কাছে অনুরোধ থাকবে দোষীদের বিরুদ্ধে যেন কঠোর থেকে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’