Harirampur | পাকা রাস্তায় ধানের চাদর, বিডিওর মৃত্যুর পরেও হুঁশ ফেরেনি প্রশাসনের  

Harirampur | পাকা রাস্তায় ধানের চাদর, বিডিওর মৃত্যুর পরেও হুঁশ ফেরেনি প্রশাসনের  

ব্যবসা-বাণিজ্যের /BUSINESS
Spread the love


হরিরামপুর: বোরো ধান কৃষকের ঘরে আসতেই পাকা রাস্তাজুড়ে চলছে সেই ধান শুকানো। দূর থেকে মনে হবে ধানের চাদর। ২০২১ সালে তপনের বিডিও সোগেল মোক্তান তামাংয়ের গাড়ি রাস্তায় শুকাতে দেওয়া ধানের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন বিডিও। তাঁর মৃত্যুর পর নড়েচড়ে বসেছিল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসন। প্রশাসনের প্রচারে সাময়িক বন্ধ হয়েছিল রাস্তাজুড়ে ধান শুকানো। ২০২৫-এ একইভাবে আবার রাস্তায় ধান শুকাতে দেখে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন গাড়িচালক থেকে পথচলতি সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে বাইকচালকরা।

বিডিওর মৃত্যুর পরেও কেন কৃষকদের রাস্তায় ধান শুকানোর প্রবণতা বন্ধ করতে পারল না প্রশাসন, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। কালিয়াগঞ্জ থেকে রোজ বাইক নিয়ে ব্যবসার কাজে হরিরামপুর আসেন রজত সাহা। দেহাবন্দ থেকে হরিরামপুর যাওয়ার রাস্তায় জোড়াব্রিজ, ডাঙ্গাপাড়া, মহাটোর সহ একাধিক জায়গায় এখন পাকা রাস্তার একপাশ জুড়ে চলছে বোরো ধান শুকানো। রজতের বক্তব্য, ‘রাস্তায় ধানের উপর বাইকের চাকা উঠে গেলে ধানের মালিক তেড়ে আসেন, গালিগালাজ করেন। তার চেয়েও বড় ভয়, ধানের ওপর বাইকের চাকা পিছলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।’ বহুবার অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন। রজত সাহার মতো বংশীহারি থেকে আসেন স্বপনকুমার বিশ্বাস। তাঁর বক্তব্য, ‘উলটোদিক থেকে হোক আর পেছন দিক থেকেই হোক, চার চাকার গাড়ি এলে বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়তে হয়। কাঁচা মাটিতে বাইক নামানো যায় না। একটা দুর্ঘটনা ঘটলেই অতি সক্রিয়তা দেখা যাবে পুলিশ থেকে প্রশাসনের।’

এই ছবি শুধুমাত্র হরিরামপুর ব্লকের নয়, গোটা জেলার। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমণ্ডি, বংশীহারী,  কুমারগঞ্জ, গঙ্গারামপুর, তপন থেকে হিলি ব্লকের একাধিক পাকা রাস্তার অর্ধেক দখলে চলে গিয়েছে ধান শুকানোর কাজে। পাকা রাস্তার পাশে যেসব কৃষকের বাড়ি তাঁরাই প্রশাসনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ধান শুকানোর কাজে লাগান পাকা রাস্তা।

হরিরামপুর ব্লকের ডাঙ্গাপাড়া সুন্দইল, মালিয়ানদিঘি সবখানেই চলছে পাকা রাস্তায় ধান শুকানোর কাজ। নাকোর গ্রামের কৃষক মোজাম্মেল হোসেন জানান, লাগাতার বৃষ্টির কারণে সবখানেই মাটি ভেজা। ভেজা ধান বাড়িতে বস্তাবোঝাই করে রাখাও মুশকিল। তাই বাধ্য হয়ে পাকা রাস্তায় ধান শুকাতে হচ্ছে।

বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক নিমাই সরকার বলেন, ‘কয়েক বছর আগে আমার এক ভাই অতুল দেবশর্মার মৃত্যু হয়েছিল হরিরামপুর ব্লকের গুরখের যাওয়ার রাস্তায়। সেদিনও রাস্তায় ধান ছিল। প্রশাসন ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে বসে থাকে। কেউ মারা গেলে তবেই এগিয়ে আসে।’
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শুভ্রজিৎ দাস বলেন, ‘তৃণমূলের তাঁবেদারি করতেই দিন শেষ প্রশাসনের। সমাজে সকলের উপকারে আসবে, এমন কাজ করবে সেই সময় কোথায় প্রশাসনের?’ হরিরামপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রেমচাঁদ নুনিয়া বিষয়টি নিয়ে বিডিওর সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।

বিডিও অত্রি চক্রবর্তী বলেন, ‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’ হরিরামপুর থানার আইসি অভিষেক তালুকদার বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেলে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ গঙ্গারামপুরের মহকুমা শাসক অভিষেক শুক্লা জানিয়েছেন, প্রশাসন এই বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ করবে। কিন্তু কবে পদক্ষেপ করা হবে, সেই দিকে তাকিয়ে সাধারণ মানুষ যাঁরা রোজ যাতায়াত করছেন দুর্ঘটনার আশঙ্কা মাথায় নিয়েই।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *