হলদিবাড়ি: প্রশাসনিক উদাসীনতায় আজ পর্যন্ত তৈরি হয়নি অ্যাম্বুল্যান্সের ভাড়ার তালিকা। রোগীর পরিবারের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে হলদিবাড়িতে যেমন খুশি ভাড়া নিচ্ছেন অ্যাম্বুল্যান্স চালকরা। অভিযোগ, নেওয়া হচ্ছে দ্বিগুণ ভাড়া। স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্ধারিত কোনও ভাড়ার তালিকা না থাকায় কিছুটা নিরুপায় হয়েই বেশি টাকা দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। দীর্ঘদিন ধরে অ্যাম্বুল্যান্সচালকদের এমন দৌরাত্ম্য চললেও চুপ প্রশাসন। বারবার এমনই অভিযোগ আসছে ব্লক স্বাস্থ্য দপ্তরে। এবার তা নিয়ে নড়েচড়ে বসল হলদিবাড়ি রোগীকল্যাণ সমিতি।
ওই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে মঙ্গলবার সমিতির এক বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বিডিওর চেম্বারে আয়োজিত ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রোগীকল্যাণ সমিতির সভাপতি পরেশচন্দ্র অধিকারী, বিএমওএইচ ডাঃ সত্যেন্দ্রকুমার, বিডিও রেনজি লামো শেরপা, পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান অমিতাভ বিশ্বাস, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শৈলবালা রায়, ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ দাস, রেডক্রস সোসাইটির হলদিবাড়ি শাখা সম্পাদক মুন্না লাহোটি প্রমুখ। এখানে ঠিক হয় রোগীকল্যাণ সমিতির তরফে অ্যাম্বুল্যান্সের ভাড়া নির্ধারণ করা হবে। ভাড়ার সেই চার্ট হাসপাতলে টাঙানো হবে।
প্রসঙ্গত, হলদিবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে সরকারিভাবে রাখা অ্যাম্বুল্যান্সগুলি দীর্ঘ কয়েক দশক ধরেই বিকল। শুধুমাত্র মাতৃযানের সুবিধাই বহাল রয়েছে। ফলে অন্যান্য ক্ষেত্রে অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা নিতে হলে বেসরকারি গাড়িতেই ভরসা রাখতে হয় এলাকার মানুষকে। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে জলপাইগুড়ি, মেখলিগঞ্জ, শিলিগুড়ি অথবা মাথাভাঙ্গা নিয়ে যেতে রোগীর পরিবারের সদস্যদের থেকে বেশি ভাড়া নিচ্ছেন অ্যাম্বুল্যান্সচালকরা।
হলদিবাড়ি বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সচালক সংস্থার তরফে মুকুল রায় বলেন, ‘বেশি পরিমাণ ভাড়া নিয়ে থাকলে তা ঠিক হচ্ছে না। সকল গাড়ির নির্দিষ্ট ভাড়া রয়েছে। তবে সরকারিভাবে ভাড়ার কোনও তালিকা নেই।’ এলাকার বিধায়ক তথা রোগীকল্যাণ সমিতির সভাপতি পরেশচন্দ্র অধিকারী জানিয়েছেন, অ্যাম্বুল্যান্সের ভাড়া নির্ধারণ সহ গ্রামীণ হাসপাতালের ইন্ডোর পরিষেবা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসার প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও হলদিবাড়ি ও মেখলিগঞ্জ ব্লকের জন্য এলাকায় ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করার প্রস্তাব রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে করা হবে। এমনই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান অমিতাভ বিশ্বাস বলেন, ‘অ্যাম্বুল্যান্সে পর্যাপ্ত অক্সিজেন রাখা বাধ্যতামূলক করা হবে। পুরসভা ও ওয়েলফায়ারের অ্যাম্বুল্যান্স দিয়ে হাসপাতালের রোগীদের পরিষেবা দেওয়া হবে।’ দন্তচিকিৎসক নিয়োগ সহ কর্তব্যরত চিকিৎসকরা যাতে রাতে আসা রোগীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেন সে বিষয় নিশ্চিত করার দাবি তোলেন তিনি।