হলদিবাড়ি: কর্মীর অভাবে হলদিবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালের ইসিজি পরিষেবা বন্ধ। পাশাপাশি পুরোনো এক্স-রে মেশিন অনেকদিন ধরে নির্ভুল পরীক্ষা করতে ব্যর্থ। ফলে গাঁটের কড়ি খরচ করে রোগীদের বাইরে থেকে পরীক্ষা করাতে হচ্ছে। তা নিয়ে রোগীর পরিজন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। অবিলম্বে তাঁরা মেশিন দুটির পরিষেবা স্বাভাবিক করার দাবি তুলেছেন। রোগীকল্যাণ সমিতির সভাপতি পরেশচন্দ্র অধিকারী বলেন, ‘সম্প্রতি সমিতির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুসারে, শংসাপত্র ও অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন একজন অস্থায়ী কর্মীকে ইসিজি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ডিজিটাল এক্স-রে মেশিনের পরিষেবা চালুর বিষয়েও তৎপরতা শুরু করা হয়েছে।’
বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী হলদিবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে শুধু স্থানীয় মানুষ নন, সংলগ্ন জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের অনেকে চিকিৎসা করাতে আসেন। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এই হাসপাতালের দুটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পরিষেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, এক্স-রে মেশিনটি অনেক পুরোনো। সেটি থেকে এখনও পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। এক্স-রে মেশিন পুরোনো হওয়ায় প্লেট দেখে রোগ নির্ণয় সম্ভব হচ্ছে না। এক রোগীর পরিজন কুশল দাসের কথায়, ‘খোদ হাসপাতালের চিকিৎসক এক্স-রে প্লেট দেখে বিরক্তি প্রকাশ করেন। এক্স-রে প্লেট দেখামাত্র ছুড়ে ফেলে দেন। পরে বেশি টাকা খরচ করে বাইরে থেকে এক্স-রে করাতে হয়েছে। হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ২০-২৫ জন এক্স-রে করাতে আসেন। সকলের একই অভিজ্ঞতা।’ অথচ হাসপাতালে অত্যাধুনিক ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন রয়েছে। চার বছর আগে হলদিবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির তরফে বিএডিপি ফান্ডের ১৪ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা খরচ করে সেটি ক্রয় করা হয়। কিন্তু এক্স-রে প্লেটের অভাবে এখনও পরিষেবা চালু করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে কর্মীর অভাবে ইসিজি মেশিন তিন মাস বন্ধ হয়ে রয়েছে। হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৮-১০ জন ইসিজি করাতে আসেন। এখন রোগীদের বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে ইসিজি করাতে হচ্ছে। হাসপাতালে আগত এক রোগী সুমন মণ্ডলের বক্তব্য, ‘হাসপাতালে ইসিজি পরিষেবা বন্ধ হতেই স্থানীয় প্যাথ ল্যাবরেটরিগুলো সেই সুযোগে ব্যবসা ফেঁদে বসেছে। রাতারাতি ইসিজির খরচ ৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে চিকিৎসার খরচ বহুগুণ বেড়ে যাচ্ছে। আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া রোগীরা সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন।’ তাই এলাকবাসীর তরফে অবিলম্বে ওই পরিষেবা দুটি চালুর দাবি উঠেছে। স্থানীয় শিক্ষক বাপ্পা দে’র বক্তব্য, ‘হলদিবাড়ি ব্লকে একটি পুরসভা ও ছয়টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। দেড় লক্ষের অধিক মানুষ এখানে বসবাস করেন। এঁদের বেশিরভাগ এই হাসপাতালের ওপর নির্ভরশীল। এছাড়া সংলগ্ন জলপাইগুড়ি সদর ব্লক থেকেও অনেক রোগী এখানে চিকিৎসা করাতে আসেন। এরকম গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালে প্রয়োজনীয় দুটি পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে, তা ভাবা যায় না।’