অমিতকুমার রায়, হলদিবাড়ি: মাত্র ১২ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্যারাটে প্রতিযোগিতায় সোনা জিতল হলদিবাড়ির (Haldibari) মেয়ে৷ পাশাপাশি হলদিবাড়ির আরও দুজন একই প্রতিযোগিতায় রুপো ও ব্রোঞ্জ জিতেছে। সোনাজয়ী শুভ্রাঙ্কিতা গোস্বামী ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। দেশ-বিদেশের প্রায় হাজার পাঁচেক প্রতিযোগীকে পিছনে ফেলে এলাকার তিনজনের এমন সাফল্যে খুশি সকলের ক্যারাটে শিক্ষক, পরিবার থেকে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা সকলেই। গত ২৫ জুলাই থেকে কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তিনদিনব্যাপী আন্তর্জাতিক নবম ক্যারাটে চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৫ শুরু হয়েছিল। ওই প্রতিযোগিতায় হলদিবাড়ি শহর থেকে মাত্র তিনজন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। শুভ্রাঙ্কিতা তাদের মধ্যে একজন। সেখানে সাব-জুনিয়ার কাতা বিভাগে ওই ছাত্রীটি সোনা জিতেছে৷
শুভ্রাঙ্কিতা ছাড়াও রিদ্ধি সরকার সাব-জুনিয়ার কাতা ইভেন্টে রুপো এবং সৌমিক দাস সিনিয়ার কুমিতে ব্রোঞ্জ পদক জিতেছে। জয়ের পরে শুভ্রাঙ্কিতা বলে, ‘এই প্রথম আন্তর্জাতিক মঞ্চে অংশ নিয়ে সোনা জিতে আমার খুব ভালো লাগছে। এর জন্য অনেক পরিশ্রম করেছি। আমার প্রশিক্ষককে এজন্য ধন্যবাদ জানাই।’ শুভ্রাঙ্কিতা জলপাইগুড়ি সেন্ট পলস স্কুলের ছাত্রী। আট বছর ধরে সে ক্ষুদিরামপল্লির তিস্তা ভ্যালি সেনসেই কাই শিতরিয়ু ক্যারাটে অ্যাকাডেমির কর্ণধার শুভঙ্কর দে-র কাছে ক্যারাটে শিখছে। শুভঙ্কর জানিয়েছেন, কলকাতার ওই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ, নেপাল, মালয়েশিয়া, ইরানের মতো বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় পাঁচ হাজার প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেছিল৷ তার মধ্যে এলাকার তিনজনের সাফল্য অনস্বীকার্য।
শুভ্রাঙ্কিতার বাবা সৈকত গোস্বামী পেশায় ব্যাংককর্মী৷ মেয়ের সাফল্যে তিনি উচ্ছ্বসিত। সৈকত বললেন, ‘মেয়ে এই সবে জয়যাত্রা শুরু করল। আশা করব, আগামীদিনে সে আরও বড় সাফল্য ছিনিয়ে আনবে।’ অন্যদিকে, মা অঙ্কিতাও চান মেয়ে আগামীদিনে আরও বড় জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছোক। অন্য শিশুরাও যেন তাঁর মেয়েকে দেখে ক্যারাটে শিখতে এগিয়ে আসে। অন্যদিকে, শান্তিনগরের বাসিন্দা রিদ্ধি বলিউড উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। সে জানায়, গত পাঁচ বছর ধরে সে ক্যারাটের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। তার বাবা ভবতোষ সরকার বর্তমান সমাজে মেয়ের সুরক্ষার জন্যই তাকে ক্যারাটেতে ভর্তি করেছিলেন। সৌমিক দাসের বাড়ি হলদিবাড়ি শহরের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত তালা কোম্পানিপাড়া এলাকায়। তিনি বর্তমানে জলপাইগুড়ির আনন্দ চন্দ্র কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।