রাজু হালদার, গঙ্গারামপুর: বাড়িতে মাঝেমধ্যেই বসত জুয়ার আসর। যাতে পরিবারের বাড়তি আয় হত। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে এসে বহুবার জুয়ার আসর নিয়ে আপত্তি জানান বধূ। কিন্তু তাঁর কথা কেউ শোনেননি। উলটে দেদার জুয়ার আসর চালাতেন স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। শুক্রবার রাতে বাড়িতে জুয়ার আসর বসাতে বাধা দিলে ওই বধূকে মেরে হাত ভেঙে দেন স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির লোকেরা বলে অভিযোগ। শনিবার বাড়িতে জুয়ার আসর বন্ধ করতে পুলিশের দ্বারস্থ হন বধূ। ঘটনাটি গঙ্গারামপুর থানার পশ্চিম হালদারপাড়া এলাকার। আর আহত বধূর নাম অনামিকা সরকার।
এবিষয়ে মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দীপাঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ জমা হয়েছে। আইন অনুযায়ী তদন্ত হবে। তদন্তের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’
পশ্চিম হালদারপাড়ার বাসিন্দা প্রবীর হালদারের সঙ্গে অনামিকা সরকারের পাঁচ বছর আগে বিয়ে হয়। বর্তমানে তাঁদের একটি সাড়ে তিন বছরের পুত্রসন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে তাঁর ওপরে স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির লোকেরা অত্যাচার চালাতেন বলে অভিযোগ অনামিকার। শুক্রবার রাতে প্রবীর বাড়িতে বন্ধুদের সঙ্গে জুয়ার আসর বসান। অনামিকা জুয়ার আসর বসাতে বাধা দেন। জুয়ার আসর বন্ধ না করলে থানার দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানাতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন বধূর স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। এরপর বধূকে মেরে হাত ভেঙে দেন বলে অভিযোগ। বর্তমানে বধূ গঙ্গারামপুর সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনার পর অনামিকার মা শনিবার দুপুরে গঙ্গারামপুর থানায় জামাই সহ পাঁচজনের নামে লিখিত অভিযোগ করেন।
আহত অনামিকার মা বুলবুলি সরকারের অভিযোগ, ‘মাঝেমধ্যেই আমার জামাই বন্ধুদের নিয়ে বাড়িতে জুয়ার আসর বসাত। আমার মেয়ে এসবের বিরোধিতা করত। এদিন বিরোধিতা করলে জুয়ার আসার ভেঙে যায়। জামাই সহ শ্বশুরবাড়ির লোকেরা মেরে আমার মেয়ের হাত ভেঙে দেয়। মেয়ে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বিয়ের পর থেকে মেয়েকে অত্যাচার করা হত। আমরা ন্যায্য বিচার চাই।’
অনামিকার বাবা স্বপন সরকারও মেয়ের সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের বিচারের দাবি তুলেছেন। তাঁর কথায়, ‘অসামাজিক কাজের বিরোধিতা করায় আমার মেয়েকে মারধর করা হয়েছে। আমার সাড়ে তিন বছরের নাতিকে তারা আটকে রেখেছে। আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’
যদিও আহত বধূর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা ভিন্ন কথা বলছেন। অনামিকার শ্বশুর প্রদীপ হালদারের কথায়, ‘গতকাল জন্মদিনের একটি অনুষ্ঠান ছিল। সেই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে গণ্ডগোল হয়েছিল। তবে বাড়িতে জুয়ার আসর বসানোর বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। কেউ নিজের বাড়িতে এসব করে? উপরন্তু কালকে বৌমার বাবা-মা এসে আমাদের মারধর করেছে।’