গঙ্গারামপুর: পুজোর বেদি বানালেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বধূরা। পুরোহিত বেশে মন্ত্র উচ্চারণে পুজো করলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। এবছরও এভাবেই সরস্বতী পুজোয় মেতে উঠলেন রায়পুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়া ও শিক্ষক শিক্ষিকারা।উল্লেখ্য, গঙ্গারামপুর(Gangarampur) ব্লকের সীমান্তবর্তী অশোকগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের রায়পুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ১৯১ জন। তার মধ্যে মাত্র ৪ জন পড়ুয়া তপশিলি জাতি ও উপজাতির। বাকি ১৮৭ জন পড়ুয়া সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের।
প্রতিবারের মতো বিদ্যালয়ের তরফে এবছরও সরস্বতী পুজোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। সকাল হতে পুজোর যাবতীয় বাজার করেন সহ শিক্ষক সাজাহান আলি,অমিত হাসান। বেলা বাড়তে পুজোর বেদি তৈরি করেন বিদ্যালয়ের মিড ডে মিলের রাধুনি তহিমা বেওয়া,কুলসুম বেওয়া ও জুলেখা বেওয়ারা। পুজোর ফুল,বেলপাতা তাঁরাই জোগাড় করেন। ফল কাটা ও নৈবেদ্যও তৈরি করেন। দুপুর গড়াতেই ধুতি পড়ে পুরোহিত বেশে পুজো শুরু করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাজনারায়ণ গোস্বামী। সেখানে অঞ্জলি দেন বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। নতুন পড়ুয়াদের হাতে খড়ি দেওয়ান প্রধান শিক্ষক মহাশয়। পুজো শেষে পাত পেড়ে খিচুড়ি,ঘন্ট,চাটনি,লুচি, পায়েস খাওয়ানো হয় সবাইকে। এরপর বিদ্যালয় চত্বরে চলে নাচ,গান,আবৃত্তি সহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এই প্রসঙ্গে রায়পুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাজ নারায়ন গোস্বামী বলেন, ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আমি জেলা ক্রীড়া প্রতিযোগিতা নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। তাই সরস্বতী পুজোর সমস্ত আয়োজন করেছেন সহ শিক্ষক সাহাজান আলি এবং অমিত হাসান। পুজোর বেদি বানিয়েছেন তহিমা বেওয়া,কুলসুম বেওয়া ও জুলেখা বেওয়ারা। তাঁদের শাড়ি দিয়ে প্রতিমা বসানোর জায়গায় প্যান্ডেল করা হয়েছে। আমি শুধু পুরোহিত হিসেবে ছিলাম।” তিনি আরও বলেন, ‘আজকে সকলেই সরস্বতী পুজোয় অংশ নিয়েছে, অঞ্জলি দিয়েছে। সরস্বতী পুজোর পাশাপাশি আমাদের বিদ্যালয়ে ঈদ উৎসবের আয়োজন করা হয়। সেখানেও আমরা ভেদাভেদ ভুলে উৎসবে মেতে উঠি।”