রাজু হালদার, গঙ্গারামপুর: দীর্ঘ প্রায় ১০ বছরের প্রতীক্ষার অবসান। অবশেষে গঙ্গারামপুর পুরসভায় পরিস্রুত পানীয় জলপ্রকল্পের শিলান্যাস হল। সোমবার গঙ্গারামপুর (Gangarampur) স্টেডিয়াম এবং শান্তি কলোনি এলাকায় আয়োজিত দুটি অনুষ্ঠানে গঙ্গারামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান প্রশান্ত মিত্র পরিস্রুত পানীয় জলপ্রকল্পের শিলান্যাস করেন। প্রায় ৭৪ কোটি ১৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে মোট পাঁচটি বৃহদাকার জলের রিজার্ভার নির্মাণ সহ অন্যান্য পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে। পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী এক বছরের মধ্যে পুরসভার ১৮টি ওয়ার্ডের নাগরিকদের বাড়ি বাড়ি পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছাবে। এর ফলে পরিস্রুত পানীয় জলের দীর্ঘদিনের সংকট মিটবে।
১৯৯৩ সালে বাম সরকারের উদ্যোগে গঙ্গারামপুর পুরসভা স্থাপিত হয়। ১৮টি ওয়ার্ডের এই পুরসভা প্রায় দু’দশক ধরে বামেদের দখলে ছিল। রাজ্য রাজনীতিতে ক্ষমতা পরিবর্তনের পর বাড়ি বাড়ি পরিস্রুত পানীয় জল পরিষেবা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ২০১৫ সালে তৃণমূল কংগ্রেস গঙ্গারামপুর পুরসভা দখল করে। এরপর বছরের পর বছর পেরোলেও ওই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত না হওয়ায় পুর নাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তৃণমূল পরিচালিত পুর বোর্ড বিরোধীদের সমালোচনার মুখেও পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা সোমনাথ দত্ত বললেন, ‘যতই দিন যাচ্ছে ভূগর্ভস্থ জলের স্তর নেমে যাচ্ছে। নলকূপ কিংবা সাবমার্সিবল পাম্প ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় জল মিলছে না। দীর্ঘদিন ধরে পানীয় জলের সংকট চলছে। অদূরভবিষ্যতে বাড়ি বাড়ি পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া হলে আমি আরও অনেকের মতো উপকৃত হব।’ আরেক স্থানীয় বাসিন্দা বিকাশ বসাক বললেন, ‘বাড়ি বাড়ি পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তৃণমূল পুরসভায় ক্ষমতায় আসে। এরপর ১০ বছরেও পরিস্রুত পানীয় জলপ্রকল্প বাস্তবায়িত হয়নি। প্রকল্প রূপায়িত হলে অসংখ্য মানুষ পানীয় জলের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবেন।’
পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দীর্ঘ চেষ্টার পর সম্প্রতি আর্থিক বরাদ্দ মিলেছে। চেয়ারম্যান বললেন, ‘বাড়ি বাড়ি পরিস্রুত পানীয় জল দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলাম। দীর্ঘদিন ধরে ওই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছি। নানা কারণে দেরি হয়েছে। এবার প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। দ্রুত নাগরিকদের পরিস্রুত পানীয় জল পরিষেবা দেওয়া হবে।’
এদিনের অনুষ্ঠানে ভাইস চেয়ারম্যান জয়ন্ত দাস, এগজিকিউটিভ অফিসার পঙ্কজকুমার পুরকাইত এবং বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের আধিকারিক সহ পুরসভার কর্মীদের একাংশ উপস্থিত ছিলেন।