জয়ন্ত সরকার, গঙ্গারামপুর: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এক ধাক্কায় চাকরি গিয়েছে গঙ্গারামপুর হাইস্কুলের ৫ জন শিক্ষক ও ১ জন শিক্ষাকর্মীর। স্কুলটিতে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে গণিত বিভাগের একমাত্র শিক্ষক চাকরিচ্যুত হওয়াতে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে অঙ্কের শিক্ষক শূন্য হয়ে পড়লে স্কুলটিতে। এই পরিস্থিতিতে পাস কোর্সের শিক্ষক দিয়ে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে গণিতের ক্লাস করাতে বাধ্য হবে স্কুলটি। স্কুলের ইউনিট টেস্ট চালানোই দুষ্কর হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন বিদ্যালয়ে কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি সামাল দিতে একমাত্র ভগবানকেই ভরসা করছেন এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাহুল দেব বর্মন।
বৃহস্পতিবার মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন ২৫ হাজার ৭৫২ জন। এরমধ্যে গঙ্গারামপুর হাইস্কুলের পাঁচজন শিক্ষক এবং একজন অশিক্ষক কর্মী (ক্লার্ক) রয়েছেন। চাকরি বাতিলের তালিকায় স্কুলের উচ্চমাধ্যমিক স্তরে একজন গণিতের শিক্ষক এবং একজন ইংরেজি শিক্ষক রয়েছেন। এছাড়া নবম দশম স্তরে দুজন বায়ো সায়েন্সের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং একজন ইংরেজি শিক্ষিকা রয়েছেন। তার সঙ্গে রয়েছেন একজন অশিক্ষক কর্মী(ক্লার্ক)। স্কুলটিতে বর্তমানে ৩৩ জন স্থায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং প্রায় ২ হাজার ৫০০ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছেন। বর্তমান বছরে একজন শিক্ষক অবসরগ্রহণ করেছেন এবং আরও তিনজন শিক্ষক অবসরগ্রহণ করবেন। তার সাথে ৫ জন শিক্ষক ও ১ জন অশিক্ষক কর্মীর একসঙ্গে চাকরি চলে যাওয়াতে দিশেহারা স্কুলটি। গঙ্গারামপুর হাইস্কুলে শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে প্রথম পর্বের মূল্যায়ন। সেই মূল্যায়ন পর্ব পরিচালনা করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে স্কুলটিকে। চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা শুক্রবার বিদ্যালয়ে উপস্থিত হননি। তবে চাকরিচ্যুত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উচ্চমাধ্যমিকের খাতা আজকে ফেরত দিতে দেখা যায়নি।
গঙ্গারামপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রাহুল দেব বর্মন জানান, ‘স্কুলে আজকে থেকে ইউনিট টেস্ট পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আমাদের স্কুলে পরীক্ষা চালানো দুষ্কর হয়ে যাচ্ছে। আমি কিছু কনট্র্যাক্টচুয়াল শিক্ষকদেরকে দিয়ে কাজ করাচ্ছি। আমাদের প্রতিটি ক্লাসে তিনটে করে সেকশন রয়েছে। ছাত্রছাত্রী প্রায় ২৫০০। স্কুল কী করে চলবে জানি না। ৫২ জন স্টাফ থেকে কমতে কমতে নেমে গেছে ৩৩ জন স্টাফে। তার মধ্যে ২৯ মার্চ একজন রিটায়ার করেছেন। আরও তিনজন এই বছর রিটায়ার হবেন। তার মধ্যে ৬ জন স্টাফ চাকরিচ্যুত হলেন। স্কুল যে কী করে চালাব বুঝতে পারছি না। এখন একমাত্র ভগবান ভরসা।’
এদিকে গঙ্গারামপুর ব্লকের বিভিন্ন স্কুলের সঙ্গে সঙ্গে সয়রাপুর কেএমভি হাইস্কুলেও পাঁচজন শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়েছে। এই স্কুলের ২০ জন স্থায়ী শিক্ষকের মধ্যে চাকরিচ্যুত হলেন ৫ জন শিক্ষক। এদের মধ্যে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে কম্পিউটার সায়েন্স এবং সংস্কৃতের একজন করে শিক্ষক এবং নবম-দশম স্তরে একজন ভূগোল এবং দুইজন ইংরেজি শিক্ষক রয়েছেন এই তালিকায়। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ৯৭৭ জন ছাত্রছাত্রী থাকায় পঠনপাঠনে সমস্যায় পড়তে হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।