আজাদ, মানিকচক: এক মাস আগে মানিকচকের ভূতনিতে প্রায় আট কোটি টাকা ব্যয়ে রিং বাঁধ তৈরি করা হয়েছিল। কয়েকদিনের বৃষ্টিতেই নতুন সেই রিং বাঁধে ভয়াবহ ফাটল ধরেছে। একটি বা দুটি নয়, ১৫টিরও বেশি ফাটল দেখা গিয়েছে নতুন রিং বাঁধে। শুধু ফাটল বললে ভুল হবে, নবনির্মিত রিং বাঁধে এক কোমরেরও বেশি গর্ত সৃষ্টি হয়ে গিয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই বাঁধের এমন হাল হলে গঙ্গার জল আরও বাড়লে তাসের ঘরের মতো এই বাঁধ ভেঙে পড়বে বলে আশঙ্কায় ঘুম উড়েছে ভূতনিবাসীর। তবে একে বড় ফাটল বা গর্ত মানতে নারাজ সেচ দপ্তর। এগুলিকে রেইনকাট বলে দাবি মালদা সেচ দপ্তরের আধিকারিকের।
এদিকে, শনিবার রাত থেকে ফুঁসছে গঙ্গা। গত শনিবার গঙ্গার জলস্তর ছিল ২৪.২০ মিটার। মাত্র ২৪ ঘণ্টায় গঙ্গার জলস্তর বেড়েছে প্রায় ২৩ সেন্টিমিটার। রবিবারের গঙ্গার জলস্তর ২৪.৪৩ সেন্টিমিটার। যেভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে গঙ্গার জলস্তর বাড়ছে, তাতে হয়তো বা দুই-একদিনের মধ্যে বিপদসীমা ২৪.৬৯ মিটার অতিক্রম করে যাবে। ভূতনিবাসীর বক্তব্য, নতুন বাঁধ বৃষ্টির জলই থামাতে পারছে না। তাহলে কী করে গঙ্গাকে সামলাবে।
মাত্র এক মাস আগে ভূতনিতে নতুন রিং বাঁধের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। ২৫০০ মিটারের বাঁধটি পশ্চিম রতনপুর থেকে শুরু করে কেশরপুর পর্যন্ত বিস্তৃত। নতুন রিং বাঁধ নির্মাণের সময়েই তা বেশিদিন টিকবে না বলে আশঙ্কা করছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ভাঙনদুর্গতদের অভিযোগ, মাটির বদলে বালির বাঁধ তৈরি করেছে সেচ দপ্তর। নতুন বাঁধ নির্মাণের পর প্রথম বর্ষাতেই বেশ কয়েকটি ফাটলের সৃষ্টি হয়। নতুন বাঁধের নীচ দিয়ে বৃষ্টির জলের স্রোত বইতে থাকে। রবিবারে দেখা গেল বৃষ্টির কারণে নতুন বাঁধে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কয়েকদিনের বৃষ্টিতেই বাঁধের এই হাল হয়েছে।
এ বিষয়ে ভূতনি কল্যাণ কমিটির সভাপতি আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা বাঁধ নির্মাণের সময় থেকেই অভিযোগ করে আসছিলাম, বালির বাঁধ দিয়ে গঙ্গাকে থামানো যাবে না। মাত্র কয়েকদিনের বৃষ্টিতে বাঁধে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়ে গিয়েছে। আজ থেকে গঙ্গার জল বাড়তে শুরু করেছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই বিপদসীমার ওপর দিয়ে জল বইতে শুরু করবে। তখন এই বালির বাঁধ গঙ্গার জলের তোড়ে ভেসে যাবে।’
তবে মালদা সেচ দপ্তরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার শিবনাথ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘এগুলি গর্ত বা ফাটল নয়, এগুলি রেইনকাট। নতুন বা পুরোনো যে কোনও বাঁধেই হতে পারে। ইতিমধ্যেই রেইনকাটগুলি বালির বস্তা দিয়ে মেরামতির কাজ শুরু করা হয়েছে। এটি স্বাভাবিক ব্যাপার। আশঙ্কার কোনও বিষয় নেই।’