হরিশ্চন্দ্রপুর: হরিশ্চন্দ্রপুরজুড়ে কয়েকদিনের লাগাতার বৃষ্টির ফলে জল বাড়তে শুরু করেছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার ফুলহর নদীতে। এই পরিস্থিতিতে ভাঙন শুরু হয়েছে নদীর দক্ষিণ তীরবর্তী রশিদপুরে। আতঙ্কে ওই এলাকার বাসিন্দাদের পাশাপাশি একাধিক গ্রামের বাসিন্দা। রশিদপুরেই ফুলহর নদী প্রায় ৯০ ডিগ্রির মতো বাঁক নিয়েছে।
স্থানীয় কৃষক কুন্দন যাদবের কথায়, ‘ভাঙনের আতঙ্কে এখন থেকে রাত জাগতে শুরু করেছি। আমরা চাই আমাদের স্থায়ী পুনর্বাসনের দিকে নজর দিক সরকার।’ যদিও হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকের বিডিও তাপস পাল বলেন, ‘ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে কথা হয়েছে। চলতি বছরেই ওই এলাকায় ভাঙন রোধের জন্য প্রোজেক্ট নেওয়া হয়েছে বলে আমি জানি। সেটি অনুমোদনের জন্য রাজ্যেও পাঠানো হয়েছে।’
এদিন এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, নদীর তীরবর্তী পাড়ের জমিতে ভাঙনের প্রভাবে ফাটল ধরেছে। ইতিমধ্যে অনেক কৃষকের জমি নদীর তলায় চলে গিয়েছে বলে তাঁদের দাবি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতিবছর ফুলহর নদীর ভাঙনে রশিদপুরের ক্ষতি হয়। অথচ প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয় না। এখনও পদক্ষেপ না করলে রশিদপুর জলের তলায় চলে যেতে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা।
রশিদপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মহম্মদ আকাশের কথায়, ‘গতকাল রাত থেকে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। আর কিছুটা ভাঙন হলেই আমার বাড়িও ফুলহরের তলায় চলে যাবে। পরিবার নিয়ে আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছি। জানি না সরকার আমাদের নিয়ে কী ভাবছে।’
ফুলহর নদীর দক্ষিণ তীরবর্তী অংশে ইসলামপুর পঞ্চায়েতের রশিদপুর, ভাকুরিয়া, কাউয়াডোল, মীরপাড়া, তাঁতিপাড়া সহ একাধিক গ্রাম রয়েছে। ফুলহর নদীতে জল বাড়লে বা কমলে, ভাঙন বা প্লাবনে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এলাকাগুলি। প্রকৃতপক্ষে এগুলি হল নদীর অসংরক্ষিত এলাকা।
এদিকে সেচ দপ্তরের মতে, নদীর অসংরক্ষিত অঞ্চল দক্ষিণ পাড়ে প্রাকৃতিক নিয়মে ভাঙন হবেই। বাঁকের জন্য রশিদপুরে নদীর ঘূর্ণন ওই এলাকায় সবথেকে বেশি থাকে। ফলে ভাঙনটা তাড়াতাড়ি শুরু হয়।
এ বিষয়ে মহানন্দা সেচ দপ্তরের জেলার এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার শুভঙ্কর গুড়িয়া বলেন, ‘জল সামান্য বেড়েছে। ইতিমধ্যে আমরা ওই এলাকায় ভাঙন রোধের জন্য প্রোজেক্ট বানিয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠিয়ে দিয়েছি। আশা করছি অনুমোদন হয়ে যাবে। তবে পুজোর পরেই কাজ শুরু হবে।’
এদিকে, ভাঙন নিয়ে সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার সঙ্গে কথা বলেছেন বলে এলাকার বিধায়ক তজমুল হোসেন জানান। বিধায়কের কথায়, ‘রশিদপুর এলাকায় ভাঙন রোধের জন্য তিনি অবিলম্বে পদক্ষেপ করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। আশা করি দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।’