সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শ্রীকৃষ্ণ যখন শিশুপালকে বধ করেন, তখন শ্রীকৃষ্ণের তর্জনীতে আঘাত লেগে রক্তপাত শুরু হয়। দ্রৌপদী তখন নিজের শাড়ির আঁচল ছিঁড়ে কৃষ্ণের হাতে বেঁধে দেন। এতে কৃষ্ণ অভিভূত হয়ে দ্রৌপদীকে চিরকাল রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দেন। পরবর্তীতে যখন কৌরবরা দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ করতে উদ্যত হয়, তখন কৃষ্ণ অলৌকিকভাবে দ্রৌপদীর সম্মান রক্ষা করেন। মহাভারতের এই ঘটনা থেকেই রাখি বন্ধনের প্রচলন হয় বলে অনেকেই মনে করে থাকেন।
সনাতন ধর্মে রাখি বন্ধনের বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে। ভাইদের হাতে এদিন বোনেরা রক্ষাসূত্র বেঁধে দেন। ভাইয়ের হাতে রাখি পরিয়ে দিয়ে তার সুস্থ ও নীরোগ জীবন প্রার্থনা করে বোন। ভাইয়ের কপালে লাল তিলক কেটে জীবনে সুখ, শান্তি ও প্রাচুর্যে ভরে ওঠার প্রার্থনা জানায়। একইসঙ্গে ভাইও সারাজীবন বোনকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দেয়। এভাবেই আত্মিক সম্পর্কের গিঁট আরও দৃঢ় হয় ভাই-বোনের।
এবছর রাখি পূর্ণিমা কবে পড়েছে?
পঞ্জিকা মতে, এবছর রাখি বন্ধন পালিত হবে ৯ অগস্ট, শনিবার। শ্রাবণী পূর্ণিমা তিথিতেই প্রতিবছর রাখি বন্ধন উৎসব পালিত হয়ে থাকে। একারণে অনেকে শ্রাবণী পূর্ণিমাকে রাখি পূর্ণিমাও বলে থাকেন। আগামী ৮ আগস্ট দুপুর ২টো ১২ মিনিটে পড়ছে রাখি পূর্ণিমা তিথি। পূর্ণিমা চলবে ৯ আগস্ট দুপুর ১টা ২১ মিনিট পর্যন্ত। তিথি অনুসারে ৯ আগস্ট শনিবার সকাল ৫টা ৪৭ মিনিট থেকে দুপুর ১টা ২৪ মিনিটের মধ্যে রাখি বন্ধনের শুভ মুহূর্ত রয়েছে। এই সময়ে বোনেরা ভাইদের হাতে রাখি পরিয়ে তাঁদের নীরোগ ও সুস্থ জীবন কামনা করবেন।
শ্রাবণী পূর্ণিমার মাহাত্ম্য
শ্রাবণী পূর্ণিমা হিন্দু ধর্মে একটি গুরুত্বপূর্ণ তিথি। শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমাকে অত্যন্ত পবিত্র পূর্ণিমা হিসেবে ধরা হয়। মনে করা হয় এসময় কোনও কিছু প্রার্থনা করলে তা সফল হয়। রাখি বন্ধন শ্রাবণী পূর্ণিমার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই পূর্ণিমাতেই বোন ভাইয়ের জন্য পৃথিবীর সকল সুখ শান্তি ঐশ্বর্য প্রার্থনা করে। একইসঙ্গে ভাইও তার বোনের সুরক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়।
শ্রাবণী পূর্ণিমা এবং রাখি বন্ধন উভয়ই ধর্মীয়, আধ্যাত্মিক ও সামাজিক দিক থেকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। রাখি বন্ধন কেবল একটি উৎসব নয়, বরং মানব সম্পর্কের আত্মিক গভীরতা, সুরক্ষা ও পারস্পরিক ভালোবাসার এক পবিত্র বন্ধন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন