ফালাকাটা: উত্তরে বর্ষা ঢুকেছে কয়েকদিন হল। আর বর্ষাকাল শুরু হতেই দেখা মিলছে হালকা বা ভারী বৃষ্টির। তাই বাড়ির বাইরে বের হলেই সকলের প্রয়োজন হচ্ছে ছাতার। স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালতে যাতায়াতকারীদের নিত্যসঙ্গীও বটে। ফলে শহর ফালাকাটায় ছাতার চাহিদাও বাড়ছে। শুধু বর্ষা থেকে বাঁচতেই নয়, ছাতা এখন ফ্যাশন স্টেটমেন্টও বটে। তাই ভারী বৃষ্টি আসার আগেই অনেকে ছাতা সংগ্রহ করে রাখছেন। ফালাকাটার বাসিন্দা অনুরূপা দে বললেন, ‘মাঝে মাঝেই বৃষ্টি হচ্ছে। তাই আগেভাগে একটি ছাতা কিনে নিলাম। পরে দাম বাড়বে, আর মনের মতো পাবও না।’
বাজারে গিয়ে দেখা গেল ব্যবসায়ীরা পসরা সাজিয়ে বসেছেন। টু ফোল্ড, থ্রি ফোল্ড এবং লম্বা শিকের বড় ছাতার চাহিদা বেশি। ‘থ্রি ফোল্ড’ ছাতার মধ্যে এবছর চারদিকে নেট লাগানো ছাতার আমদানি হয়েছে। সেই ছাতাগুলি আবার বিভিন্ন রং এবং ডিজাইনেরও পাওয়া যাচ্ছে। আকারে ছোট হওয়ার কারণে অন্য ছাতার থেকে থ্রি ফোল্ডের চাহিদা বেশি। এধরনের ছাতাগুলো সাধারণত ম্যানুয়াল এবং অটোম্যাটিক দুই ধরনের হয়। ম্যানুয়াল ছাতা হাত দিয়ে টেনে খোলা এবং বন্ধ করতে হয়। কিন্তু অটোম্যাটিক ছাতায় বোতামের মাধ্যমেই খোলা বা বন্ধ হয়।
ফালাকাটার ব্যবসায়ী অমিত পাল বলেন, ‘মহিলা ক্রেতাদের মধ্যে থ্রি ফোল্ড নেটযুক্ত ছাতার চাহিদা বেশি দেখা যায়।’ ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বর্তমানে লম্বা শিকের ছাতায় বোতামের ব্যবহার শুরু হয়েছে। তবে আগের দিনে ছাতার কাপড়ের রং ছিল মূলত কালো। কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন রঙের কাপড়ের ছাতার প্রচলন দেখা যাচ্ছে বলে দাবি করেছেন তাঁরা। পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পতাকার আদলেও ছাতা দেখা যাচ্ছে বাজারে। ছাতার কাপড়ের গুণগত মানের উপর নির্ভর করে ছাতাগুলির দাম ২৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা।
ছাতা কিনতে আসা রবীন্দ্রচন্দ্র সরকারের কথায়, ‘এবছর ছাতায় অনেক নতুনত্ব দেখতে পাচ্ছি। ফলে পছন্দ করতে একটু হিমসিম খেতে হচ্ছে।’ তবে ছাতার তুলনায় বর্ষাতির চাহিদা কম। বর্ষাতি মূলত বাইক বা সাইকেলচালকরা ব্যবহার করেন। তবে শিশুদের মধ্যে বর্ষাতির চাহিদা তুলনামূলক বেশি। শিশুদের জন্য রকমারি বর্ষাতি দেখতে পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। কারণ শিশুরা মূলত বিভিন্ন কার্টুনের ছবি সংবলিত বর্ষাতি পরতে ভালোবাসে। ফলে বাজারে ডোরেমন, সিনচ্যানের মতো কার্টুনের বর্ষাতি যেমন দেখা যাচ্ছে তেমনি স্পাইডারম্যান, সুপারম্যানের মতো সুপারহিরো আঁকা বর্ষাতিও বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে। তবে লাভের আশায় পসরা সাজিয়ে বসলেও এখনও তেমন বিক্রি হয়নি বলেই জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাই ভারী বৃষ্টির অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন তাঁরা। তবে ছাতা বিক্রি যৎসামান্য হলেও, বর্ষাতি বিক্রি নেই বললেই চলে। ব্যবসায়ী গোপাল সাহা বলেন, ‘এখনও ছাতা বা বর্ষাতি তেমন বিক্রি শুরু হয়নি। তবে ভারী বর্ষা শুরু হলে চাহিদা বাড়বে।’