Falakata | ফালাকাটায় পাঁচ বছর ধরে বন্ধ স্বজন আবাস! শীত-বর্ষায় নাজেহাল রোগীর আত্মীয়রা

Falakata | ফালাকাটায় পাঁচ বছর ধরে বন্ধ স্বজন আবাস! শীত-বর্ষায় নাজেহাল রোগীর আত্মীয়রা

শিক্ষা
Spread the love


ফালাকাটা:  হাসপাতালে আসা রোগীর পরিজনদের রাত্রিযাপন করার জন্য বানানো হয়েছিল স্বজন আবাস। ফালাকাটা গ্রামীণ হাসপাতালের ঠিক সামনেই এই স্বজন আবাসটি চালু করা হয়েছিল। স্বজন আবাসটি চালুর পর ভালোই চলতে থাকে। কিন্তু করোনার সময় থেকে সেটি বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। এই মূহূর্তে তাই ফালাকাটা সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীর আত্মীয়রা রাত্রিযাপন করতে সমস্যায় পড়ছেন। ঝড়-বৃষ্টির দিনে বাধ্য হয়ে দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগীর আত্মীয়রা সমস্যায় পড়ছেন। ফালাকাটার নাগরিকরা দাবি তুলেছেন, ফালাকাটা সুপারস্পেশালিটি হাসপাতাল চত্বরে দ্রুত স্বজন আবাস তৈরি করা হোক।

রোগীর আত্মীয়দের সুবিধার কথা ভেবে হাসপাতালে একটি ‘পেশেন্ট পার্টি নাইট শেলটার’ তৈরি করা হয়েছিল। ফালাকাটায় যখন গ্রামীণ হাসপাতাল ছিল, সে সময় স্বজন আবাস নামে ওই শেলটারটি তৈরি করা হয়। এর জন্য ফালাকাটার প্রয়াত বিধায়ক অনিল অধিকারী তাঁর উন্নয়ন তহবিল থেকে ১৩ লক্ষ ২১ হাজার টাকা খরচ করেছিলেন। ২০১২-২০১৩ সালে স্বজন আবাসটি রোগীর আত্নীয়দের জন্য খুলে দেওয়া হয়। দেখভালের দায়িত্ব ছিল পঞ্চায়েত সমিতির ওপর। করোনার সময় ওই নাইট শেলটারটিও স্বাস্থ্য দপ্তর ব্যবহার করে। সেই যে বন্ধ হয়ে যায়, আর চালু হয়নি। এখন নাইট শেলটারে রোগীর আত্মীয়রা থাকেন না। সেটি ব্যবহার করছেন মাতৃযানের চালকরা। আর হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের পরিজনরা বাধ্য হয়ে যত্রতত্র রাত কাটান।

গোটা বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ফালাকাটা পুরসভার চেয়ারম্যান প্রদীপ মুহুরি অবশ্য বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। চেয়ারম্যানের কথায়, ‘হাসপাতালে থাকা স্বজন আবাসটি চালু করা যায় কি না আমরা স্বাস্থ্য দপ্তরের সঙ্গে কথা বলব। প্রয়োজনে পুরসভা স্বজন আবাসটি চালু করবে।’

ফালাকাটা সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি থাকা এক রোগীর আত্মীয় প্রাণেশ রায় বলেন, ‘দু’দিন ধরে শাশুড়ি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। মেয়েদের ওয়ার্ডে একজন ছেলেও থাকতে পারবে না। তাই হাসপাতালের আশপাশে থাকার ঘরের খোঁজ করি। কিন্তু কোথাও পাচ্ছি না। বাধ্য হয়ে খোলা আকাশের নীচেই আছি।’

ফুলবাড়ি থেকে আসা এক প্রসূতির স্বামী টোটোন মণ্ডল বলেন, ‘স্ত্রী সন্তানের জন্ম দিয়েছে। ডাক্তার বলেছেন আরও ৫ দিন হাসপাতালেই থাকতে হবে। বাধ্য হয়ে শহরে মোটা টাকায় হোটেলের রুম ভাড়া নিয়ে থাকতে হচ্ছে।’

এই মুহূর্তে ফালাকাটা সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে প্রতিদিন প্রায় এক হাজার রোগী চিকিৎসা করাতে আসেন। অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি হন। ফালাকাটা ব্লক সহ পার্শ্ববর্তী জেলা কোচবিহার, জলপাইগুড়ি এবং নিম্ন অসম ও ভুটান থেকেও রোগীরা এই হাসপাতালে আসেন। যাঁরা স্থানীয় বাসিন্দা, তাঁদের পরিজনরা অবশ্য রাতে বাড়ি চলে যান। সমস্যা হয় দূরের লোকজনের। ফালাকাটা সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে যাঁরা রোগী নিয়ে আসেন তাঁদের মধ্যে একটা বড় অংশই দরিদ্র। স্বাভাবিকভাবেই তাঁদের পক্ষে টাকা খরচ করে শহরের হোটেলগুলিতে রাত্রিবাস করা সম্ভব হয় না। তার ওপর হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় রাত্রিবাসের জন্য তেমন কোনও হোটেলও নেই। বিশেষ করে বর্ষাকালে এবং শীতকালে রোগীর আত্মীয়রা রাত্রিযাপন করতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছেন। বাধ্য হয়ে রোগীর আত্মীয়রা অনেকেই হাসপাতালের থাকা বিশ্রামাগারেই রাত কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *