Falakata | প্রেমের টানে ঘরছাড়ার হিড়িক

Falakata | প্রেমের টানে ঘরছাড়ার হিড়িক

শিক্ষা
Spread the love


ভাস্কর শর্মা, ফালাকাটা : প্রেমের টান যেন দিনকে দিন বেড়েই চলেছে ফালাকাটায়! পুলিশের রেকর্ড তো সেই কথাই বলছে। সেই প্রেমের টানে ফালাকাটার মহিলা মহলের ১৪ থেকে ৪০ বছর বয়সিরা পাড়ি দিচ্ছে কেরল, গুজরাট সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। কারও সম্পর্ক টিকছে। আবার কেউ কয়েকদিনের মধ্যেই ফিরে আসছে। আবার কখনো-কখনো প্রেমের টানে ঘরছাড়াদের কেউ কেউ বিপথগামী হয়ে পড়ছে।

ফালাকাটা থানার পুলিশ জানিয়েছে, প্রতি মাসেই এমন নিখোঁজের অভিযোগ জমা পড়ছে। তাঁদের মধ্যে কেউ বধূ, তো কেউ নাবালিকা। স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে, বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার পর যেসব নাবালিকা ফিরে আসছে, তাদের মধ্যে অধিকাংশই গর্ভবতী। বিষয়টি নিয়ে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটিও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

ফালাকাটা থানার আইসি অভিষেক ভট্টাচার্য বলেন, ‘চলতি বছরে গত ৬ মাসে ১০ জন বধূ নিখোঁজের অভিযোগ আমরা পাই। আবার ১ বছরে অন্তত ২৫ জন মেয়ে, যাদের মধ্যে নাবালিকাও আছে, নিখোঁজ হয়েছে। এদের মধ্যে অবশ্য বেশিরভাগকেই আমরা ফিরিয়ে আনতে পেরেছি।’ তাঁর কথায়, এমন কাণ্ড ঘটছে মূলত সচেতনতার অভাবে। বলেন, ‘মেয়েদের পালিয়ে যাওয়া, অল্প বয়সে বিয়ে এসবের বিরুদ্ধে আমাদের লাগাতার প্রচার চলছে। আগের তুলনায় মানুষ অনেক সচেতন হয়েছেন।’

ফালাকাটা থানা সূত্রে খবর, নিখোঁজ বধূদের মধ্যে শহর ও গ্রামীণ এলাকা, দুই জায়গার বাসিন্দাই রয়েছেন। পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে অধিকাংশ বধূ পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। নিজের স্বামী, সন্তান, সংসার ছেড়ে তাঁরা পরপুরুষের হাত ধরে অন্যত্র চলে গিয়েছেন। বেশিরভাগ কেরল, অন্ধপ্রদেশ, তামিলনাডু চলে গিয়েছেন। নিখোঁজের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তদন্ত চালিয়ে আবার অধিকাংশ বধূকে খুঁজেও পেয়েছে। তবে তাঁদের মধ্যে সবাই কিন্তু স্বামীর ঘরে, পুরোনো সংসারে ফিরতে চেয়েছেন, তা কিন্তু নয়। কেউ কেউ ফিরেছেন। আবার ফেরার পর ফের সংসার ছেড়েছেন, এমনটাও ঘটেছে। আবার পুলিশ জানিয়েছে, তারাও নিজের গাঁটের কড়ি খরচ করে অনেক বধূকে ফিরিয়ে এনেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ফালাকাটায় মেয়ে ও নাবালিকা পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাও বেড়েছে। থানা সূত্রে খবর, গত ১ বছরে প্রায় ২৫ জন মেয়ে ও নাবালিকা পালিয়েছে। যদিও পুলিশের দাবি এদের মধ্যেই বেশিরভাগকেই তারা উদ্ধার করে নিয়ে এসেছে। মূলত প্রেমঘটিত কারণেই নাবালিকারা ঘর ছেড়েছে। তবে অনেকে পাচারচক্রের খপ্পরেও পড়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। থানায় অভিযোগ করা রয়েছে, অথচ এখনও পুলিশ হদিস পায়নি, এমন গোটা সাতেক কেস এখনও রয়েছে।

সিডব্লিউসি’র চেয়ারম্যান অসীম বসু বলেন, ‘১৮ বছরের কমবয়সি নাবালিকাদের পালিয়ে যাওয়া বা গর্ভবতী হওয়া সত্যিই উদ্বেগের বিষয়। আমরা একেবারে বুথ স্তরে এবিষয়ে সচেতনতা গড়তে উদ্যোগ নিয়েছি। এই কাজে অভিভাবকদেরও সচেতন হতে হবে।’

সচেতনতা প্রসঙ্গে ফালাকাটার সমাজকর্মী শুভজিৎ সাহা বলেন, ‘আমরা শহরের ওয়ার্ডে, গ্রামের স্কুলে গিয়ে পথনাটক, সচেতনতা শিবির করে লাগাতার বাল্যবিবাহ, নারী পাচারের বিষয়ে সচেতনতা প্রচার করছি। আসলে নাবালিকারা মোবাইল ফোনে বেশি আসক্ত হয়ে পড়ছে কি না, সেটা অভিভাবকদেরও দেখতে হবে। সচেতনতাই পারে এইসবের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *