ফালাকাটা: শহরের গয়নার দোকানগুলির নিরাপত্তা নিয়ে ফালাকাটা থানার পুলিশ নড়েচড়ে বসল। সোমবার খোদ ফালাকাটা থানার আইসি’র নেত্বত্বে শহরে থাকা গয়নার দোকানগুলিতে নিরাপত্তা খতিয়ে দেখা হল। প্রত্যেক স্বর্ণ ব্যবসায়ী এবং পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারের নম্বর আদানপ্রদান করা হয়েছে। দোকানগুলিতে নিরাপত্তার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের একাধিক নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। আবার স্বর্ণ ব্যবসায়ীরাও পুলিশের কাছে দোকানের নিরাপত্তার জন্য একাধিক দাবি রাখেন।
ফালাকাটা থানার আইসি অভিষেক ভট্টাচার্য বলেন, ‘এদিন শহরের গয়নার দোকানগুলির নিরাপত্তা খতিয়ে দেখা হয়। আমরা ব্যবসায়ীদের সেফটি অ্যালার্ম, সিসিটিভি ক্যামেরা সহ সব ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখি। দোকানগুলিতে নিরাপত্তা দিতে আমরাও বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।’
সেই পদক্ষেপ কী কী? ফালাকাটা থানার পুলিশ জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই শহরের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের নিয়ে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়েছে। দোকানগুলিতে কখনও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে যাতে তারা অন্তত একটি মেসেজ করে তা জানিয়ে দিতে পারেন পুলিশকে। এছাড়াও দুপুর ২টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত গয়নার দোকান সংলগ্ন এলাকাগুলিতে সশস্ত্র পুলিশ টহল দেবে। একটি স্পেশাল পুলিশ ভ্যানও থাকবে সঙ্গে। পাশাপাশি রাতে দোকানগুলির সামনে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে পুলিশ জানিয়েছে, সব গয়নার দোকানে সিসিটিভি ক্যামেরা, সেফটি অ্যালার্ম রাখা বাধ্যতামূলক। এছাড়াও এক সঙ্গে যাতে অনেক খদ্দের দোকানের ভেতর ভিড় করতে না পারেন, সেদিকে লক্ষ রাখতে বলা হয়েছে দোকানদারদের।
ফালাকাটায় কিন্তু আগেও গয়নার দোকানকে টার্গেট করেছে দুষ্কৃতীরা। ২০২৩ সালের ২২ ডিসেম্বর রাতে নেতাজি রোডে একটি গয়নার দোকানে ডাকাতির চেষ্টা করা হয়েছিল। দোকানের নাইট গার্ডদের বেঁধে ফেলা হয়। তবে দোকানদার ও পুলিশ টের পেয়ে যাওয়ায় দুষ্কৃতীদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। সেই দোকানেই তার আগেও দু’বার ডাকাতির ছক কষা হয়েছিল। একবার ডাকাতদল সোনার গয়না নিয়ে শূন্যে গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায়। তারপর থেকেই অবশ্য শহরের গয়নার দোকানগুলিতে নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি ওঠে।
শহরে এই মুহূর্তে ৩০টিরও বেশি বড় গয়নার দোকান রয়েছে। এছাড়াও ছোট দোকান, স্বর্ণালংকার তৈরির জন্য প্রায় ৪০টি কারখানা আছে। বর্তমানে বেশ কয়েকটি নামীদামি কোম্পানির শোরুমও তৈরি হয়েছে। সব মিলিয়ে ফালাকাটায় রোজ বহু টাকার সোনার কারবার হয়। কিন্তু তার পরেও নিরাপত্তা নিয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা আতঙ্কেই রয়েছেন। রবিবার শিলিগুড়ির ঘটনার পর ওই আতঙ্ক যেন আরও কয়েকগুণ বেড়েছে।
ফালাকাটা স্বর্ণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সম্পাদক বিনয় কর্মকার বলেন, ‘শিলিগুড়ির ঘটনার পর আমরা সত্যিই উদ্বিগ্ন। তাই পুলিশের কাছে নেতাজি রোডে সশস্ত্র পুলিশ পিকেট বসানোর দাবি জানিয়েছি।’