রমেন দাস: কান ফাটানো শব্দে হস্টেলের উপর হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল বিমানটি। ঘটনার আকস্মিকতায় কিছুক্ষণের জন্য বাক্যহারা হয়ে গিয়েছিলাম। সম্বিত ফিরলে চারিদিকে দেখি হাহাকার। ‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালকে’ দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে ভয়াবহ সেই অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন বিজে মেডিক্যাল কলেজের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া তথা হস্টেলের আবাসিক শুভম গুপ্তা। কপাল জোড়ে তিনি এই দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন।
তিনি বলেন, “এদিন দুপুরে আমরা হস্টেলের ভিতরেই ছিলাম। কেউ কেউ মধ্যাহ্নভোজন করছিল। আচমকা একটি বিমান হস্টেলের উপর ভেঙে পড়ে। ঘটনার আকস্মিকতায় কিছুক্ষণের জন্য বাক্যহারা হয়ে গিয়েছিলাম। সম্বিত ফিরলে চারিদিকে দেখি হাহাকার। গুরুতর আহত অবস্থায় এদিকে ওদিকে পড়েছিলেন অনেক পড়ুয়া। দ্রুত আমরা কয়েকজন উদ্ধারকাজ শুরু করি। দুর্ঘটনার জেরে হস্টেলের একটি বিরাট অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। আপাতত সেখানেই তাঁরা চিকিৎসাধীন।” সূত্রের দাবি, এই দুর্ঘটনায় হস্টেলের ৫ জন পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছে। তবে নিশ্চিত খবর এখনও জানা যায়নি।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ৩৮ মিনিট নাগাদ টেক অফের খানিকক্ষণের মধ্যেই আহমেদাবাদ বিমানবন্দরের কাছে ওই মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলে ভেঙে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার যাত্রীবাহী বিমান। লন্ডনগামী উড়ানের দুর্ঘটনায় অন্তত ২০০ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে অসমর্থিত সূত্রের খবর, বিমানে থাকা ২৪২ জনেরই মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের পরিবার পিছু ১ কোটি টাকা আর্থির সাহায্যের ঘোষণা করেছে টাটা। যে হস্টেলে বিমান ভেঙে পড়েছে সেখানকার নিহতদের পাশে দাঁড়ানোরও আশ্বাস দিয়েছে সংস্থাটি। ভয়াবহ এই বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে গুজরাটের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানিরও। কিন্তু কী কারণে বিমানটি দুর্ঘটনার শিকার হল, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
আশ্চর্যজনকভাবে বিমানের ধ্বংসাবশেষ থেকে জীবিত অবস্থায় একজনকে উদ্ধার করা গিয়েছে বলে জানিয়েছে আহমেদাবাদ পুলিশ। তাঁর অবস্থা এখন স্থিতিশীল। ইতিমধ্যেই বিমানের যাত্রীতালিকা প্রকাশ করেছে এয়ার ইন্ডিয়া। জানা গিয়েছে যাত্রীদের মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, ৭ জন পর্তুগিজ এবং একজন কানাডিয়ান ছিলেন। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনার পর তিন ঘণ্টার জন্য বন্ধ ছিল আহমেদাবাদ বিমানবন্দর। এখন পরিষেবা স্বাভাবিক হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ”বিমানে ১ লক্ষ ২৫ হাজার লিটার জ্বালানি ছিল। অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণেই কারও বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ছিল না। আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। মৃতদেহ উদ্ধারের কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে।”