উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ পালন না করায় দিল্লিতে বৈঠকে কার্যত নির্বাচন কমিশনের (Election Comission of India) তোপের মুখে পড়েন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ কুমার পন্থ। সূত্রের খবর, এদিন মুখ্যসচিব বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে ঢোকেন। সেখানে প্রায় ১ ঘন্টা ছিলেন তিনি। এরপর সেখান থেকে বেরিয়ে যান। আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে মুখ্যসচিব কোনও মন্তব্য করেননি। কমিশনের তরফেও কিছু জানানো হয়নি। তবে সূত্রের খবর, কমিশন মনোজ পন্থের কাছে জানতে চায় কেন নির্দেশ পালন করা হয়নি। যা নিয়ে মনোজ পন্থের জবাবে সন্তুষ্ট হয়নি কমিশন। বরং তাঁরা সাফ জানিয়ে দেন, অক্ষরে অক্ষরে কমিশনের নির্দেশ পালন করতে হবে রাজ্যকে। এক্ষেত্রে ২১ অগাস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। তবে সূত্রের খবর, মুখ্যসচিব কমিশনের কর্তাদের বুঝিয়ে দেন, অফিসারদের সাসপেন্ড করার বিষয়টি নিয়ে তিনি একা সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর উপরেই সবটা নির্ভর করছে। কলকাতায় ফিরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি বিশদে আলোচনা করবেন বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন মুখ্যসচিব।
উল্লেখ্য, গত ৫ অগাস্ট ভোটার তালিকায় নাম নথিভুক্তির ক্ষেত্রে অনিয়মের জেরে বারুইপুর ও ময়নার দুই নির্বাচন নিবন্ধন আধিকারিক (ERO) ও দুই সহকারি নির্বাচন নিবন্ধন আধিকারিক (AERO) কে সাসপেন্ড করে তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন। বারুইপুর পূর্বের ইআরও এবং এইআরও হিসেবে কাজ করছিলেন দেবোত্তম দত্ত চৌধুরী এবং তথাগত মণ্ডল। ময়না বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য ওই দুই দায়িত্বে ছিলেন বিপ্লব সরকার ও সুদীপ্ত দাস। তাঁদের পাশাপাশি সুরজিৎ হালদার নামে এক ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের নামেও এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে এসআইআর নিয়ে সংঘাতের আবহে মুখ্যমন্ত্রী কমিশনের নির্দেশ পালন করতে সরাসরি অস্বীকার করেন। তিনি জানিয়ে দেন, রাজ্য সরকার সর্বোতভাবে আধিকারিকদের পাশে রয়েছে। কিন্তু পরে তাঁদের মধ্যে দু’জন যথাক্রমে বারুইপুর পূর্বের ডেটা এন্ট্রি অপারেটর সুরজিৎ হালদার ও ময়নার এইআরও সুদীপ্ত দাসকে নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সেকথা নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়। অফিসারদের সাসপেন্ড করে এফআইআর না করার কারণ হিসেবে বলা হয় এতে আধিকারিকদের মনোবল ভেঙে যাবে। তাছাড়া তদন্ত করে অভিযোগ খতিয়ে দেখার কথাও বলে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু রাজ্যের যুক্তি মানতে চায়নি কমিশন। তার জেরেই এদিন ডেকে পাঠানো হয় মুখ্যসচিবকে।