মালদা: টোপ লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের। হুমকি আবাস যোজনা বাতিলের। এমনই জোড়া নকশায় ২১শে জুলাই ধর্মতলা ভরাতে মালদা থেকে লোক নিয়ে যেতে চাইছে তৃণমূল। বিরোধীদের তোলা এমন মারাত্মক অভিযোগকে কেন্দ্র করে এখন সরগরম মালদা। যদিও অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে জেলার তৃণমূল নেতৃত্ব।
কোথাও বলা হচ্ছে, সভার জন্য তৃণমূলের মিছিলে হাঁটতে হবে। তা না হলে বাতিল হয়ে যাবে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা। আবার কোথাও নতুন আবেদনকারীদের আধার কার্ড থেকে মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে ফোন করে বলা হচ্ছে, প্রকল্পের মিটিং আছে। মিটিংয়ে আসলেই মিছিলে হাঁটতে বলা হচ্ছে। এমনই অভিযোগ তুলেছেন বিজেপির দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলছেন, ‘পুরাতন মালদার কর্মীদের কাছ থেকে আমরা খবর পাচ্ছি, একুশে জুলাই ধর্মতলা ভরাতে ওই এলাকার তৃণমূল নেতারা মানুষকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টোপ দিচ্ছেন। মানুষ এখন আর তৃণমূলের সঙ্গে নেই, বিষয়টা বুঝতে পেরেই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, আবাস প্রকল্পের টোপ দেওয়া হচ্ছে। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই এমন অভিযোগ মিলছে।’ বৃহস্পতিবার পুরাতন মালদা পুরসভার কয়েকটি ওয়ার্ডে আবেদনকারীদের আধার কার্ড থেকে মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে মিটিংয়ের নাম করে ডেকে মিছিল করানো হয়েছে বলে বিজেপির অভিযোগ। উত্তর মালদার বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর বক্তব্য, ‘তৃণমূল এখন ডুবন্ত নৌকা। তৃণমূলের নেতারাও বুঝে গিয়েছেন, ’২৬-এর নির্বাচনের পর তাঁরা আর ক্ষমতায় থাকবেন না। তাই খড়কুটোর মতো লক্ষ্মীর ভাণ্ডারকে ধরে বাঁচতে চাইছেন।’ একই অভিযোগ করে সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য জামিল ফিরদৌসের বক্তব্য, ‘প্রতিটি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, একুশে জুলাই ধর্মতলায় না গেলে বন্ধ করে দেওয়া হবে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। নাম কেটে দেওয়া হবে আবাস যোজনায়। সরকারি প্রকল্পকে হাতিয়ার করে সভায় লোক টানতে চাইছেন তৃণমূলের জেলা নেতারা। হরিশ্চন্দ্রপুর, রতুয়া, চাঁচলের প্রায় প্রতিটি গ্রামে গ্রামে এভাবেই সরকারি প্রকল্প নিয়ে মানুষকে ভয় দেখানো হচ্ছে।’
বিরোধীদের অভিযোগ নস্যাৎ করে রাজ্যসভার সাংসদ তৃণমূলের মৌসম নুরের কটাক্ষ, ‘সিপিএমকে খুঁজে পাওয়া যায় না। বিজেপিকে মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। বাংলার মানুষ জানেন, পাশে একমাত্র তৃণমূলই রয়েছে। তাই বাস্তব চিত্রটা বুঝে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ তুলছেন বিরোধী দলের নেতারা।’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সীর বক্তব্য, ‘বিরোধীরা পাগলের মতো কথা বলছে। বিরোধীদের বাড়ির বৌরাও লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা পাচ্ছেন। ২১শে জুলাইয়ের কর্মসূচিতে কয়েক লক্ষ মানুষ ভিড় জমাবেন। তার জন্য লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টোপ দিতে হবে না।’ মালদা থেকে অন্তত ১৫ হাজার মানুষ যাবেন বলে তাঁর দাবি।