জসিমুদ্দিন আহম্মদ, মালদা: আর মাত্র একদিন পরেই দেবীর বোধন। সব জায়গায় এখন উত্সবের আমেজ। বিভিন্ন ক্লাবে রকমারি থিমের পুজো দেখতে ইতিমধ্যে মানুষ বেরিয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে নজর কাড়ছে মালদার ৫১ ফুটের বিশালাকার দুর্গা প্রতিমা। শহর, গ্রাম সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত মানুষ ভিড় করছেন শহরের পুরাটুলি এলাকায়। মণ্ডপের সামনে রিল বানাতে ব্যস্ত তরুণ-তরুণীরা। সামাজিক মাধ্যমে এখন ভাইরাল ১২ নম্বর ওয়ার্ডের পুরাটুলি মহিলা দুর্গোৎসব কমিটির এই পুজো (Durga Puja 2025)।
৫১ ফুটের দুর্গা প্রতিমা জেলায় এই প্রথম। প্রতিবছর পুরাটুলি মহিলা দুর্গোৎসব কমিটির পুজো মালদা শহরবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এই পুজোয় জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ সবটাই করেন মহিলারা। এবছর তাঁদের পুজো ১০ বছরে পা ফেলতে চলেছে।
পুজোর আয়োজকরা জানান, প্রায় দুই মাস আগের থেকে এই বিশালাকার দুর্গা প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। বহুদিন ধরে শহরজুড়ে এই বিশালাকার দুর্গা প্রতিমা তৈরি নিয়ে প্রচার চলছিল। পুরাটুলির ওই ছোট জায়গায় এত বড় দুর্গা কি আদৌ তৈরি করা সম্ভব তা নিয়ে সন্দেহ ছিল শহরবাসীর। তবে মৃৎশিল্পী পাপাই দাসের অক্লান্ত পরিশ্রমে এই বিশালাকার মাটির প্রতিমা তৈরি করা সম্ভব হয়েছে।
দ্বিতীয়া থেকেই এই মণ্ডপটি দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে এত বড় দুর্গা প্রতিমা কি মণ্ডপে ঢুকে দেখা সম্ভব? তা নিয়ে শহরবাসীর মনে নানা প্রশ্ন ছিল। তাই দর্শনার্থীরা যাতে রাস্তা থেকে প্রতিমাটির দর্শন করতে পারেন সেরকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে এই প্রতিমা দেখার জন্য পুরাটুলি এলাকায় ভিড় লক্ষ করা যায়। দুপুর থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত মানুষ ঠাকুর দেখছেন। পুজোর চারদিন ভিড় আরও বাড়বে বলে মনে করছেন উদ্যোক্তারা।
এই পুজো কমিটির অন্যতম সদস্য তথা স্থানীয় কাউন্সিলার ছবি দাস বলেন, ‘১০ বছর আগে পুরাটুলি সর্বজনীন দুর্গাপুজো আয়োজনের দায়িত্ব পাড়ার মহিলারা নিজেদের কাঁধে নিয়েছিলেন। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে প্রতিবছর অভিনব চিন্তাভাবনার থিম পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্ব বাংলা সহ একাধিক পুরস্কার আমরা পেয়েছি।’ তিনি জানান, ৫১ ফুটের দুর্গাটির পুজো হবে না। আরেকটি প্রতিমা আনা হয়েছে। সেই প্রতিমা পুজো হবে। এছাড়া ভিড় সামলাতে ৫০ জন মহিলা স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন করা হয়েছে। সপ্তমী থেকে দশমী ভিড় নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পুলিশও থাকবে।
পুজো কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা কেয়া সরকার জানান, এই এলাকায় প্রায় চারশোটি পরিবার রয়েছে। সব পরিবারের মহিলারা এই পুজোর সঙ্গে যুক্ত। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে চাঁদা তুলতে যাই, পুজোর প্যান্ডেল কেমন হবে থেকে শুরু করে আলোকসজ্জা সবকিছু আমরা ঠিক করি।’