অনীক চৌধুরী, জলপাইগুড়ি: মানব দেহের সাতটি চক্রের কথা জানেন? এই চক্রগুলির কী গুরুত্ব তা হয়তো অনেকে জানেন না (Durga Puja 2025)। তবে এবার এই সাতটি চক্রের ভূমিকা নিজেদের পুজোমণ্ডপে তুলে ধরবে আসাম মোড় রিক্রিয়েশন ক্লাব পরিচালিত আসাম মোড় তারাপাড়া সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটি। শহরের থিমপুজোগুলির মধ্যে অন্যতম এই ক্লাবের পুজো। প্রতিবছর তাঁরা দর্শনার্থীদের নতুন কিছু উপহার দেন। এবার পুজোয় তাঁদের থিম ‘দিব্যশক্তি’।
এই অভিনব থিমটিকে বাস্তবের রূপ দিচ্ছেন রঞ্জিত মাহাতো। তিনি জানান, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বাংলাদেশ এবং নেপালের ঘটনা থেকে বোঝা যায় মানুষের মধ্যে ক্রোধ, লোভ, মোহ ইত্যাদি বেড়ে চলেছে। পাশাপাশি অতিমারি ও অন্যান্য রোগের প্রকোপে মানুষের মৃত্যু ঘটছে। এই যুগের মানুষ বিলাসিতায় ভুগছে। ফলে ওই সাতটি চক্র হারিয়ে ফেলেছেন। এই ভাবনাকে মণ্ডপে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে।
মণ্ডপে ঢোকার মুখে থাকবে রাগ, ক্রোধ, লোভ পরিত্যাগ করার বার্তা৷ মণ্ডপের সঙ্গে কিছুটা সামঞ্জস্য রেখে এবং সাবেকিয়ানা বজায় রেখে প্রতিমা তৈরি হচ্ছে। প্রতিমা গড়ছেন কুমোরটুলি মৃৎশিল্পী হরেন্দ্রনাথ পাল। থিমের সঙ্গে মানানসই আলোকসজ্জাও থাকবে। এছাড়া রাস্তাটি সাজানো হবে চন্দননগরের আলোয়।
এবিষয়ে সম্পাদক নিতাই কর বলেন, ‘এবারের থিম একটু অন্যরকমের। আমরা মানুষকে মূলাধার চক্র, স্বাধিষ্ঠান চক্র, মণিপুর চক্র, বিশুদ্ধ চক্র, আজ্ঞা চক্র, সহস্রার চক্র ও অনাহত চক্র কী এবং এগুলি কীভাবে আমরা জাগ্রত করতে পারি তা বোঝানোর চেষ্টা করছি। মানুষ মণ্ডপে প্রবেশ করলে ভিন্ন স্বাদ পাবেন।’
তিনি আরও জানান, দেবীর প্রতিটি রূপ মানবদেহের প্রতিটি চক্রকে জাগ্রত ও সক্রিয় করে তোলে। মানুষ চাইলে এই চক্রগুলিকে জাগ্রত করতে পারে। এই চক্রগুলি জাগ্রত হলে মানুষের আধ্যাত্মিক বিকাশ হয়। এই সাতটি চক্র যে দেবী দুর্গার বিভিন্ন শক্তির সঙ্গে যুক্ত তা বোঝাতে চান উদ্যোক্তারা।
কোষাধ্যক্ষ সুনীল কুণ্ডুর কথায়, ‘রামধনুর সাতটি রং যেমন কিছু না কিছু বার্তা বহন করে, তেমন প্রতিটি চক্রকে একটি নির্দিষ্ট রং, প্রতীক ও উপাদান দিয়ে বোঝানো হবে। পাশাপাশি দেবী দুর্গার বিভিন্ন রূপ অর্থাৎ নবদুর্গা প্রতিটি চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকবে।’ পুজোর আয়োজকদের মতে, এই থিম কেবল উৎসবকে নয়, বরং মানবদেহের শক্তিকেন্দ্র ও আধ্যাত্মিক উন্নতির ধারণাটিকে তুলে ধরবে। মানুষকে নিজেদের শরীর ও মন সম্পর্কে সচেতন করবে।