সাগর বাগচী, শিলিগুড়ি: কোন কোন পুজোমণ্ডপ দেখা এবছর ‘মাস্ট’ তার তালিকা ইতিমধ্যে অনেকেই তৈরি করে ফেলেছেন। প্রতি বছরের মতো এবছরও সেই পুজোমণ্ডপগুলির তালিকায় নিজেদের জায়গা পাকা করে ফেলেছে উত্তরায়ণের দুর্গাপুজো (Durga Puja 2025)। আবাসনের পুজো হলেও উত্তরায়ণ সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটি (Uttarayan Sarbojanin Durga Puja Committee)-র আয়োজিত পুজোর আলাদা আকর্ষণ থাকে। উত্তরায়ণের পুজো যেন বিভিন্ন ভাষাভাষীর মানুষের মিলনক্ষেত্র হয়ে ওঠে।
১৯তম বর্ষে উত্তরায়ণের পুজোর থিম ‘শান্তি’। বিশ্বের অশান্তি, হানাহানিকে দূর করে কীভাবে শান্তির জগতে মনকে নিয়ে যাওয়া যায়, সেটিকে থিমের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রতিমার ক্ষেত্রে সাবেকিয়ানা বজায় রাখা হচ্ছে। পুজো কমিটির তরফে মহালয়ার দিন প্রভাতফেরি করা হবে। ট্যাবলো নিয়ে আবাসনের মানুষ গোটা চত্বর ঘুরবেন। পঞ্চমীতে পুজোর উদ্বোধন করার পরিকল্পনা রয়েছে। চলতি বছর পুজোর বাজেট ঠিক হয়েছে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা। পুজো কমিটির সভাপতি তপন দাস বলেন, ‘বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবে আবাসনের মাড়োয়ারি, বিহারি, পঞ্জাবি, নেপালি সহ বিভিন্ন জাতি ও ভাষাভাষীর মানুষ একসঙ্গে মেতে ওঠেন। পুজোর ক’দিন এখানে সবাই মিলে প্রসাদ গ্রহণ করি।’ পুজোর প্রতিদিন মণ্ডপের কাছে বানানো মঞ্চে গান, নাচের পাশাপাশি নাটক মঞ্চস্থ হবে। যেখানে আবাসনের বাসিন্দারা অংশগ্রহণ করবেন। নবমীর দিন বাউলগানের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। তপন বলেন, ‘পরপর থিমের পুজো করে আমার পুরস্কার পেয়েছি। ভোররাত পর্যন্ত বাইরের মানুষ আমাদের প্রতিমা দেখার জন্য আসেন।’
পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের বাসিন্দা সৈকত মাইতি পুজোর থিমটি নিয়ে কাজ করছেন। সেই থিমটি মণ্ডপ আকারে তুলে ধরেছেন গোপাল মান্না ও শন্তু কয়াল। মহালয়ার মধ্যেই পুজো প্যান্ডেলের কাজ তাঁরা শেষ করে দিতে চাইছেন। রাবারের শিট, প্লাস্টার অফ প্যারিস, লোহার পাইপ, বাঁশ, কাঠ ব্যবহার করে প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। যার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের মূর্তি গড়া হয়েছে। সৈকতের কথায়, ‘বিশ্বজুড়ে আশান্তি, যুদ্ধের পরিবেশ। সেটা কাটিয়ে শান্তির পরিবেশ ফিরলে চিত্রটা যেমন হবে, সেই ভাবনা থেকেই প্যান্ডেল গড়ে তোলা হচ্ছে।’ পুজো প্যান্ডেল রাতে নীল ও হলুদ রঙের আলোয় ফুটিয়ে তোলা হবে। আর সেই আলোর খেলা থিমটিকে আলাদা মাত্রায় নিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন সৈকত। ইতিমধ্যে রাত জেগে প্যান্ডেলের কাজ শেষ করার তোড়জোড় শুরু হয়েছে।