রাহুল মজুমদার, ফাঁসিদেওয়া: মাদকের কারবারে অতিষ্ঠ গ্রামীণ পুলিশ (Drug Dealing)। ফাঁসিদেওয়া থেকে শুরু করে নকশালবাড়ি, খড়িবাড়ির ভারত-নেপাল সীমান্ত এলাকায় মাদকের কারবার মারাত্মক আকার নিচ্ছে বলে অভিযোগ। প্রায়ই ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে একাধিক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দিন দুয়েক আগেও খড়িবাড়ি ভারত-নেপাল সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক সমেত দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে খড়িবাড়ি থানার পুলিশ। গত এক বছরে গ্রামীণ এলাকা থেকে কয়েক কোটি টাকার ব্রাউন সুগার উদ্ধার হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে নগদ টাকাও।
মাদকের কারবার রুখতে এবং সচেতনতা বাড়াতে এবার পড়ুয়াদের থেকেও পরামর্শ চাইছে দার্জিলিং জেলা পুলিশ। তাই শিলিগুড়ি মহকুমা এলাকার বিভিন্ন স্কুল এবং কলেজে গিয়ে শিবির করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দার্জিলিং জেলা পুলিশ। সেইমতো তারা কাজও শুরু করে দিয়েছে। বুধবার ঘোষপুকুর কলেজে গিয়ে একটি শিবির করেছে ফাঁসিদেওয়া থানার পুলিশ। সেখানে জেলা পুলিশের পদস্থ কর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে নকশালবাড়ির এসডিপিও আশিস কুমারের বক্তব্য, ‘মাদকের কারবার রুখতে পড়ুয়াদের সচেতন করা হচ্ছে। এই সমাজে পড়ুয়াদের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। প্রয়োজনে তারা আমাদের গোপনে মাদক কারবারিদের খোঁজও দিতে পারবে।’
শিলিগুড়িতে পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ তৈরি হওয়ার পর মাদকের বিরুদ্ধে অলআউট অভিযান শুরু হয়। এর জেরে শিলিগুড়ির ঝংকার মোড়ের মাদকের কারবারি তামান্না ও তাঁর স্ত্রী সহ একাধিক বড় মাদক কারবারি সমস্যায় পড়েন। এর জেরে শহর ছেড়ে অনেক কারবারিই এই মুহূর্তে গ্রামীণ এলাকায় গা-ঢাকা দিয়েছেন। মূলত পানিট্যাঙ্কিতে ভারত-নেপাল সীমান্ত, খড়িবাড়ি, নকশালবাড়ি, ফাঁসিদেওয়ার একাধিক এলাকায় এই কারবারিরা গোপন পরিচয়ে থাকতে শুরু করেছেন। সেখানেই তাঁদের কারবারের সাম্রাজ্য খুলে বসেছেন। মালদা, মুর্শিদাবাদ থেকে মাদক নিয়ে শিলিগুড়িতে প্রবেশ করা এখন কারবারিদের পক্ষে সহজ নয়। বিহার মোড় পার হলেই ধরা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সেফ করিডর হিসেবে গ্রামীণ এলাকাকেই বেছে নিচ্ছেন কারবারিরা। নেপাল ও বিহার সীমান্ত এলাকায় তুলনায় সহজে মাদক আনতে পারছেন কারবারিরা।
দিন পাঁচেক আগে খড়িবাড়িতে মালদার কালিয়াচকের বাসিন্দা দীপঙ্কর মণ্ডলকে ৫১১ গ্রাম ব্রাউন সুগার সমেত গ্রেপ্তার করেছে খড়িবাড়ি থানার পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে নগদ চার লক্ষ টাকা। সেইসঙ্গে গ্রেপ্তার হয়েছেন স্থানীয় হ্যান্ডলার এম সাবির। জানা গিয়েছে, মাদক হাতবদল করার সময় অভিযুক্তদের হাতেনাতে ধরেছিল পুলিশ। এরপরেই জেলা পুলিশের তরফে সিদ্ধান্ত হয় গ্রামীণ এলাকার বিভিন্ন কলেজ-স্কুলে সচেতনতার পাঠ দেবে পুলিশ। সেইমতো বুধবার ঘোষপুকুর কলেজের পড়ুয়াদের সচেতন করা হয়েছে। কীভাবে কারবারিদের শনাক্ত করা যায়, কোথাও বিক্রি হলে কী করে পুলিশকে জানানো যায় সেই বিষয়ে জানানো হয়েছে। পুলিশকর্তারা নিজেদের ফোন নম্বরও দিয়েছেন। পড়ুয়াদের পরিচয় গোপন রাখা হবে বলে জানানো হয়েছে।