দিনহাটা: দিনহাটা পুরসভার বিল্ডিং প্ল্যান পাশ জালিয়াতি কাণ্ডের তদন্ত ধামাচাপা পড়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। ওই জালিয়াতি কাণ্ডে গ্রেপ্তার হওয়া এক পুরকর্মী ও দুই ইঞ্জিনিয়ারের স্বাক্ষরের নমুনা পরীক্ষার জন্য
কলকাতায় ফরেন্সিকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও কোনও রিপোর্ট আসেনি। তদন্তও মাঝপথে বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ।
বিরোধীদের অভিযোগ, সামনেই বিধানসভা ভোট তাই তদন্ত একপ্রকার ঠান্ডা ঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। গত বছরের একেবারে শেষের দিকে দিনহাটা পুরসভায় বিল্ডিং প্ল্যান পাশ জালিয়াতির ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক হইচই পড়ে যায় জেলার রাজনীতিতে। চাপ এতটাই বাড়ে একসময় পুরসভার চেয়ারম্যান গৌরীশংকর মাহেশ্বরীকে পদত্যাগ পর্যন্ত করতে হয়। বিল্ডিং প্ল্যান পাশের জালিয়াতির কাণ্ডে গ্রেপ্তার করা হয় পুরসভারই দুই ইঞ্জিনিয়ার ও এক পুরকর্মীকে। সেইসময় তদন্তে গতি আনতে তদন্তকারীরা গত ২২ জানুয়ারি গ্রেপ্তার হওয়া তিনজনের স্বাক্ষরের নমুনা কলকাতায় ফরেন্সিকে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু এক মাসের বেশি সময় পরেও ওই নমুনার সংগ্রহের ফলাফল আসেনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দিনহাটা থানার এক আধিকারিক অবশ্য দাবি করেন, তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে। যে কোনও নমুনা পরীক্ষা করা সময়সাপেক্ষ। তাই পরীক্ষার ফলাফল এলে অবশ্যই তদন্ত আগের গতিতেই চলবে।
সিপিএম নেতা শুভ্রালোক দাসের কথায়, ‘যেভাবে তদন্তের গতি এগিয়ে যাচ্ছিল তা ঠিক পথেই এগোচ্ছিল। আর তাতেই হয়তো অনেকের সমস্যা হচ্ছিল। আর সেকারণেই তদন্ত মাঝপথে বন্ধ হয়ে গিয়েছে।’ যদিও তৃণমূলের শহর ব্লক সভাপতি বিশু ধর বলেন, ‘তদন্ত তদন্তের মতো চলবে, আমাদের দল দুর্নীতিকে কোনও প্রশ্রয় দেয় না।’
গত ২৪ ডিসেম্বর প্রথমবার বিল্ডিং প্ল্যান পাশ জালিয়াতি কাণ্ডের একটি অভিযোগ দিনহাটা থানায় আসে। আর এরপরেই একের পর এক অভিযোগ সামনে আসতেই তদন্ত নতুন মাত্রা নেয়। ওই ঘটনায় যে সমস্ত তথ্য এসেছিল, তাতে প্রাক্তন চেয়ারম্যান সহ বেশ কয়েকজন ইঞ্জিনিয়ারের স্বাক্ষর মেলে, তা যাচাই করতেই জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁরা জানিয়েছিলেন ওই সইগুলো তাঁদের নয়, নকল করা হয়েছে। সেই কারণে সইগুলি পরীক্ষা করার জন্য ফরেন্সিকে পাঠানো হয়। কিন্তু অভিযোগ, অজ্ঞাত কারণে সেই প্রক্রিয়ারও কোনও গতি নেই, স্বাভাবিকভাবেই বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছে সামনেই বিধানসভা ভোট আছে সেই কারণে তদন্ত ধামাচাপা পড়ে গিয়েছে। বিজেপির জেলা কমিটির সম্পাদক অজয় রায় বলেন, ‘কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে আসবে তাই তদন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’