Dinhata | কাঁটাতারের ওপারে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য, অত্যাচারে অতিষ্ঠ ভারতীয় কৃষকরা

Dinhata | কাঁটাতারের ওপারে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য, অত্যাচারে অতিষ্ঠ ভারতীয় কৃষকরা

ব্যবসা-বাণিজ্যের /BUSINESS
Spread the love


সঞ্জয় সরকার, দিনহাটা : রাতের অন্ধকারে কাঁটাতারের ওপারে থাকা ভারতীয়দের জমির ফসল, কৃষিকাজের যন্ত্রপাতি, পাম্পসেট সহ বিভিন্ন সামগ্রী চুরি যাওয়ার ঘটনা নিত্যদিনের। এতে নিজেদের কষ্টের ফসল ও সম্পত্তি খোয়াচ্ছেন ভারতীয়রা। পরিস্থিতি এমন যে পুরো বিষয়টি নিয়ে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করায় সম্প্রতি এক ভারতীয় কৃষককে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা। অভিযোগ, কাঁটাতারের ওপারে ভারতীয়দের ফসল ও সম্পত্তি রক্ষায় সদর্থক কোনও ভূমিকা নেয়নি বিএসএফ। কোচবিহারের দিনহাটা-২ ব্লকের নাজিরহাট-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায় এমন ঘটনায় ক্ষোভ বাড়ছে। ফসল ও কৃষিকাজের যন্ত্রপাতি নিয়ে উদ্বেগ তো রয়েছেই,  কাঁটাতারের ওপারে বসবাসকারী ও কাজ করতে যাওয়া ভারতীয় নাগরিকদের সুরক্ষা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

সোমবার সোশ্যাল মিডিয়ায় কেন্দ্রীয় সরকার ও সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। শুক্রবার তিনি তাঁর পোস্টে লেখেন, ‘কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে বসবাসকারী ভারতীয়রা হয়ে গিয়েছেন নিজভূমে পরবাসী। অথচ বাংলাদেশ যখন নিজের সীমানায় বেড়া দিল না তখন যদি ভারত সরকার ১৫০ গজ ভিতরে বেড়া না দিয়ে, সীমান্তের জিরো পয়েন্টে বেড়া দিত তাহলে কাঁটাতারের বেড়ার গেটও লাগত না, পাচারও হত না। সীমান্তের ভারতীয়দের এই নরকযন্ত্রণা সহ্য করতে হত না।’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘বাংলাদেশের সমাজবিরোধীরা এসে কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে ভারতীয়দের জমির ফসল, পাম্পসেট নির্বিচারে লুঠ করে নিয়ে যাচ্ছে। অজ্ঞাত কারণে বিএসএফকেও সেইভাবে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে দেখা যাচ্ছে না।’

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কাঁটাতারের ওই পাড়ে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের অত্যাচার দীর্ঘদিনের। জমির ফসল চুরি যাওয়ার ঘটনাও হামেশাই ঘটে। গত ২১ মার্চ শালমারার নোটাফেলা এলাকায় ইন্দো-বাংলাদেশ সীমান্তের ১৫ নম্বর গেট লাগোয়া এলাকায় আলু তোলার ঘটনাকে নিয়ে ভারতীয় চাষি ও বাংলাদেশিদের মধ্যে বিরোধ বাধে। বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা কান্দুরা বর্মন নামে এক চাষিকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। দিনের আলোয় ভারতীয় কৃষকদের দুটি পাম্পসেট পুড়িয়ে দেওয়া হয়। দুটি পাম্পসেট তুলেও নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা।

এরপরই উত্তেজনা ছড়ায় সীমান্তে। নোটাফেলা এলাকায় কাঁটাতারের ওপারের কৃষক সন্তোষ সরকারের কথায়, ‘কাঁটাতারের বেড়ার ওপারের জমিতে ধান চাষ করেছি। সেই এলাকার দুটি পাম্পসেট পুড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি দুটি পাম্পসেট তুলে নিয়ে গেছে দুষ্কৃতীরা। এভাবে চললে চাষ করাই মুশকিল।’ স্থানীয় তৃণমূল নেতা মদন বর্মনের কথায়, ‘প্রতিদিনই কাঁটাতারের ওপারে ফসল ও যন্ত্রপাতি লুঠ করছে ওই বাংলাদেশিরা। পাম্পসেট তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে। এনিয়ে অশান্তিও হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে সীমান্তের বাসিন্দারা উদ্বিগ্ন। অথচ আমাদের পাশে কেউ নেই।’

নাজিরহাট-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া রয়েছে। কাঁটাতারের ওপারে ভারতীয় ভূখণ্ডে যাতায়াতের রাস্তা বলতে কাঁটাতারের গেট। যা দিনের কয়েকটি নির্দিষ্ট সময়ে খোলা থাকে। অন্যদিকে, বাংলাদেশের দিকে কাঁটাতার না থাকায় অবাধে ভারতীয় ভূখণ্ডে এসে হামলা করছে  বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা। অসামাজিক কাজকর্ম ও পাচারও চলছে অবাধে।

মন্ত্রীর পোস্টের পরই অবশ্য বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসনের কর্তারা। সোমবার বিকেলে নোটাফেলায় স্থানীয় বাসিন্দা ও বিএসএফের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকে বসে প্রশাসন। দিনহাটার এসডিও বিধু শেখর, এসডিপিও ধীমান মিত্র, দিনহাটা-২’এর বিডিও নীতীশ তামাং প্রমুখের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এসডিপিও ধীমান জানান, বিএসএফের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। ইতিমধ্যেই পুরো বিষয়টি তাঁরা বিজিবির নজরে এনেছেন। ভারতীয়রা যখন চাষাবাদের জন্য কাঁটাতারের ওপারে যাবেন, তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আশ্বাসও দিয়েছে বিএসএফ।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *