মালদা:“যদি একই বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু মুসলমান। তবে কেন আলাদা হল ভারত পাকিস্তান।” মালদা সফরে এসে জেলা শাসকের অফিস ঘেরাও কর্মসূচি থেকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এমনই মন্তব্য করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর বক্তব্যে এদিন উঠে আসে মোথাবাড়ি থেকে রামনবমী প্রসঙ্গ। বঙ্গ বিজেপির এই মুহূর্তে সব থেকে বড় ট্রাম কার্ড যে হিন্দুত্ব, তা দিলিপের বক্তব্যে কার্যত স্পষ্ট।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মালদায় আসেন দিলীপ ঘোষ। শুক্রবার বেলা একটা নাগাদ যোগ দেন ডিএম অফিস ঘেরাও কর্মসূচিতে। মোথাবাড়ির ঘটনা এবং যোগ্যদের চাকরি বাতিল নিয়ে মূলত বিজেপির এই বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল। এদিন মালদা টাউন হলের সামনে থেকে শুরু হয় বিজেপির মিছিল। দিলীপের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন উত্তর মালদার সাংসদ খগেন মুর্মু, ইংরেজবাজারের বিধায়ক শ্রী রুপা মিত্র চৌধুরী, পুরাতন মালদার বিধায়ক গোপাল সাহা প্রমুখ। ফোয়ারা মোড় হয়ে মিছিল যখন ডিএম অফিসের অভিমুখে তখনই একদল বিজেপি কর্মী গার্ডরেল ভেঙে বাঁশের ব্যারিকেডে উঠে পড়ে। ব্যারিকেডের সামনে বসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে বিজেপির মহিলা মোর্চা।
এদিন নিজের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বক্তব্য রাখতে শুরু করেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “যারা বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে গিয়ে অত্যাচার করেছিল তারাই এপারে এসে মোথাবাড়ি তে অশান্তি করেছে। এদের মদত দিচ্ছে তৃণমূল।” যে মালদা শহরে কিছুদিন আগেই রামনবমীর মিছিলে ফুটে উঠেছিল হিন্দু মুসলিম সম্প্রীতির ছবি। সেই রাস্তায় দাঁড়িয়ে দিলীপের দাবি রামনবমী সম্প্রীতির উৎসব নয় হিন্দুদের উৎসব। হিন্দুদের বাড়ি ভেঙে জল মিষ্টি খাইয়ে ভোলানো চলবে না। এদিন রামনবমীর মিছিলে অস্ত্রের পক্ষেও সওয়াল করেন দিলীপ। এই প্রসঙ্গে তার দাবি, যখন মহরমের মিছিলে অস্ত্র থাকে তখন পুলিশ এবং বুদ্ধিজীবীরা দেখতে পায় না।
চাকরি বাতিল নিয়ে তৃণমূলকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি। তার মতে, “তৃণমূল যোগ্য অযোগ্য আলাদা করলে যারা টাকা দিয়েছে তারা কালীঘাট ঘেরাও করবে। গৌড়বঙ্গে তৃণমূলের এক সংখ্যালঘু নেতা এই চাকরির নামে অনেক টাকা তুলেছেন। চাকরিহারারা তাঁদের ছেড়ে কথা বলবে না। সেই দিন বেশি দূরে নেই।”
বক্তব্য শেষে দিলীপ সহ বিজেপির জনপ্রতিনিধিরা পুনরায় বাঁশের ব্যারিকেডের দিকে এগিয়ে যান। ফের কিছু কর্মী ব্যারিকেডে উঠে পড়লে উত্তেজনা ছড়ায়। জেলাশাসক দপ্তরে নেই জানতে পেরে অবশেষে রণে ভঙ্গ দেয় গেরুয়া শিবির। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন,”জেলাশাসক নেই তাই দেখা করতে পারলাম না। কিন্তু মালদায় হিন্দুরা আক্রান্ত। সেটা নিয়ে প্রতিবাদের দরকার ছিল। আমরা করেছি।”