উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে একুশে জুলাইয়ে খড়্গপুরের রাজনৈতিক মঞ্চে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সোমবার সকাল পর্যন্ত একটি প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলে ঘুরপাক খাচ্ছিল, “দিলীপ ঘোষ কোন মঞ্চে থাকবেন? তার উত্তর মিলল পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরে। ধর্মতলায় তৃণমূলের শহিদ দিবসের মেগা সমাবেশের দিনে, খড়্গপুরের গিরি ময়দানে বিজেপির ‘শহিদ শ্রদ্ধাঞ্জলি সভা’য় দেখা গেল তাঁকে। এই উপস্থিতি কেবল জল্পনার অবসানই ঘটায়নি, বরং তৃণমূলের বিরুদ্ধে তাঁর চিরাচরিত আক্রমণাত্মক ভঙ্গিকে আরও একবার সামনে এনেছে।
গত কয়েকদিন ধরেই দিলীপ ঘোষ তাঁর অবস্থান নিয়ে ‘হেঁয়ালিপূর্ণ’ মন্তব্য করে আসছিলেন, যা দলের কর্মীদের মধ্যেও এক ধরনের বিভ্রান্তি তৈরি করেছিল। খড়্গপুরের মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি নিজেই স্বীকার করে নিলেন সেই বিভ্রান্তির কথা। তাঁর কথায়, “যাঁরা ঘাম ঝরিয়ে, রক্ত দিয়ে পার্টিকে দাঁড় করিয়েছেন, তাঁরা একটু বিভ্রান্ত হয়ে গিয়েছিলেন। সাংবাদিক বন্ধুরা সকাল পর্যন্ত জিজ্ঞাসা করেছেন, দিলীপদা কোন মঞ্চে থাকবেন?” এই স্বীকারোক্তির পরেই তাঁর নিশানায় চলে আসে দলেরই কিছু নেতা, যাদের তিনি “ডিম-ভাত খাওয়া পার্টি” বলে কটাক্ষ করেন। নাম না করলেও তাঁর স্পষ্ট ইঙ্গিত ছিল যে, দলের মধ্যেই কিছু ব্যক্তি তাঁর অবস্থান নিয়ে কর্মীদের মধ্যে ভুল বার্তা ছড়াচ্ছিলেন।
অপরদিকে এদিন ধর্মতলা থেকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “২৬-এর নির্বাচনের পর ওদের দিয়ে জয় বাংলাও বলাব।” এই মন্তব্যেরও পালটা জবাব দিতে ছাড়েননি দিলীপ। তিনি বলেন, “আমরা জয় মা কালী, জয় মা দুর্গা ও জয় শ্রী রামও বলব। সব বলব। কিন্তু কখনও জয় বাংলা বলব না। বাংলাদেশ থেকে স্লোগান নিয়ে আসবেন। পশ্চিম বাংলাদেশ বানানোর চেষ্টা করছেন।” এই মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও তীব্র আক্রমণ করেন দিলীপ ঘোষ।
দিলীপ ঘোষের এই বক্তব্যে একদিকে যেমন তাঁর কর্মীদের প্রতি বার্তা ছিল, তেমনই ছিল প্রতিপক্ষের প্রতি চ্যালেঞ্জও। তিনি বলেন, “রক্ত দিয়ে, ঘাম দিয়ে পার্টি দাঁড় করিয়েছি। যতক্ষণ না নবান্নে ভারতীয় জনতা পার্টির নেতা বসছেন, ততক্ষণ এই লড়াই চলবে।” তিনি আরও বলেন, “১০ বছর আগেও দিলীপ দলের কর্মী ছিলেন। আজও একজন কর্মী আছি। বিজেপি যতক্ষণ না ক্ষমতায় আসছে, কর্মী হিসেবে লড়াই করব। বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরও দিলীপ কর্মী হিসেবে কাজ করবে।”