বেলাকোবাঃ নতুন রূপে সেজে উঠেছে বেলাকোবা সংলগ্ন শিকারপুরের দেবী চৌধুরাণী ও ভবাণী পাঠকের মন্দির। প্রায় সাত বছর আগে অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত হয়ে যায় এই প্রাচীন মন্দির। পুড়ে যাওয়া মন্দিরে লুকিয়ে আছে বহু ইতিহাস। পুরোনোর আদলেই একই জায়গায় নতুনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে মন্দির। তবে নতুনভাবে তৈরি হলেও বেশ কিছু ত্রুটি রয়েছে মন্দিরে। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মন্দির কমিটি সহ স্থানীয়রা। প্রশ্ন উঠেছে ঐতিহ্যবাহী মন্দিরের পরম্পরা এবং প্রথা নিয়েও। আগামী বুধবার জলপাইগুড়ির প্রশাসনিক সভা থেকে নবনির্মিত দেবী চৌধুরাণী ও ভবাণী পাঠকের মন্দিরের ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী।
জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ ব্লকের বেলাকোবার শিকারপুর চা বাগানে অবস্থিত ইতিহাস প্রসিদ্ধ ঐতিহ্যবাহী দেবী চৌধুরাণী ও ভবাণী পাঠকের মন্দির। ২০১৮ সালে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত হয়ে যায় এই মন্দিরটি। এরপর রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ২০২২ সালে মার্চ মাসে পুণরায় বিগ্রহ সমেত প্রতিষ্ঠিত করা হয় দেবীর। পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় তুলতে ফের পুরোনো মন্দিরের আদলে নতুন করে মন্দির নির্মাণ করা হয়। পাশাপাশি মন্দির চত্ত্বরের সৌন্দর্যায়নেরও উদ্যোগ নেয় রাজ্য সরকার। আর্থিক সহায়তা করে গজলডোবা উন্নয়ন পর্ষদ। মন্দিরের দেওয়ালে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ডাকাত রাণীর প্রাচীন ইতিহাস।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, বতর্মানে প্রতিদিনই নিয়ম নিষ্ঠা করে ভবাণী পাঠক-দেবী চৌধুরাণী এবং সেই মন্দিরের পাশেই মা কালির আরাধনা করা হয়। তবে প্রশ্ন উঠছে ঐতিহ্যবাহী এই মন্দিরের পরম্পরা এবং নিয়ম নিয়ে। ভস্মিভূত হওয়ার আগে মন্দিরে দেবী চৌধুরাণী ও ভবাণী পাঠক সহ ১৬ টি বিগ্রহের পুজো হত। যেখানে তাঁদের সঙ্গে পুজিত হত ছয়টি বাঘ। যাদের স্থান ছিল মন্দিরে প্রবেশের সিঁড়িতে। মন্দির এবং বিগ্রহ গুলো পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলেও অদ্ভুতভাবে সেই ছয়টি বাঘের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। কোথায় রয়েছে সেই ছয়টি বাঘের বিগ্রহ তা কেউ বলতে পারছে না। এমনকি মন্দির কমিটিও না। উল্টে মন্দির কমিটি পরম্পরা বজায় রাখতে সেই ছটি বাঘের বিগ্রহ স্থাপনের দাবি জানাচ্ছে। মন্দিরের পুরোহিত কমল রায় বলেন, “মন্দিরের পুরোনো রীতি মেনে বর্তমানে পুজো হচ্ছে না”।
বলাবাহুল্য দীর্ঘ বছরের পরম্পরা, ঐতিহ্য, রীতিনীতি ভেঙে বাধ্য হয়ে পুজো হচ্ছে মন্দিরে। যেখানে মন্দিরের পরম্পরা মানা হচ্ছে না সেখানে সৌন্দর্যায়ন করে সেই ঐতিহ্য কি ধরে রাখা সম্ভব? এই প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা।