Dental Therapy | বার্ধক্যে দাঁতের চিকিৎসার গুরুত্ব

Dental Therapy | বার্ধক্যে দাঁতের চিকিৎসার গুরুত্ব

শিক্ষা
Spread the love


উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধির সঙ্গে বার্ধক্যে স্বাস্থ্যসেবার গুরুত্ব ক্রমশ বাড়ছে। এই স্বাস্থ্যসেবার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ দাঁতের চিকিৎসা (Dental Therapy)। দুর্ভাগ্যবশত, বার্ধক্যে মুখের স্বাস্থ্য প্রায়শই অবহেলিত হয়, যার ফলস্বরূপ প্রবীণদের জীবনে অনেক জটিলতা দেখা দেয়। বার্ধক্যে দাঁতের চিকিৎসার গুরুত্ব, প্রবীণদের দাঁতের সাধারণ সমস্যা প্রভৃতি নিয়ে আলোচনায় শিলিগুড়ির শিবমন্দিরের কসমোডেন ডেন্টাল ক্লিনিকের দন্ত বিশেষজ্ঞ ডাঃ অরিজিৎ সেন

প্রবীণ বয়সে দাঁত ও মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটি শুধু খাবার চিবোনো বা কথা বলার ক্ষমতার ওপরই প্রভাব ফেলে না, বরং সামগ্রিক স্বাস্থ্য ও জীবনযাত্রার মানকে প্রভাবিত করে। দাঁতের সমস্যা থাকলে প্রবীণরা ভালোভাবে খেতে পারেন না। ফলে পুষ্টিহীনতায় ভোগার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এছাড়া মুখের সংক্রমণ শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে ডায়াবিটিস, হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের মতো গুরুতর অসুখের বুঁকি বাড়াতে পারে। সামাজিক মেলামেশায় আত্মবিশ্বাসের অভাবও দাঁতের সমস্যার কারণে দেখা দিতে পারে, যা একাকীত্ব ও বিষণ্ণতার কারণ হয়।

প্রবীণদের দাঁত সংক্রান্ত কয়েকটি সাধারণ সমস্যা –

দাঁতের ক্ষয় লালাপ্রবাহ কমে যাওয়া, মুখ শুষ্ক থাকা এবং নিয়মিত মুখ পরিষ্কার না করার কারণে দাঁতের ক্ষয় বার্ধক্যে একটি সাধারণ সমস্যা।

মাড়ির রোগ  মাড়ির প্রদাহ এবং সংক্রমণ প্রবীণদের মধ্যে অত্যন্ত প্রচলিত। এটি দাঁত হারানোর অন্যতম প্রধান কারণ।

শুষ্ক মুখ অনেক ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে বা কিছু রোগের কারণে লালাগ্রন্থির কার্যকারিতা কমে যায়। ফলে মুখ শুষ্ক হয়ে যায়। এটি দাঁতের ক্ষয় এবং মাড়ির রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

দাঁতের সংবেদনশীলতা মাড়ি সরে যাওয়ার কারণে দাঁতের গোড়া উন্মুক্ত হয়ে সংবেদনশীলতা বাড়াতে পারে।

আংশিক বা সম্পূর্ণ দাঁত হারানো বার্ধক্যে দাঁত হারানো একটি সাধারণ ঘটনা। এর ফলে খাবার চিবোনোর ক্ষমতা কমে যায় এবং মুখমণ্ডলের গঠনে পরিবর্তন আসে।

ডেঞ্চারের সমস্যা যাঁরা কৃত্রিম দাঁত (ডেঞ্চার) ব্যবহার করেন, তাঁদের ডেঞ্চার ফিটিং সমস্যা, মুখের ক্ষত বা সংক্রমণের মতো সমস্যা হতে পারে।

এইসব সমস্যা সমাধানে দাঁতের চিকিৎসকদের ভূমিকা অপরিসীম। বিশেষ করে প্রবীণদের জন্য দাঁতের চিকিৎসা, যা ‘জেরিয়াট্রিক ডেন্টিস্ট্রি’ নামে পরিচিত, তা নির্দিষ্ট চাহিদা পূরণে সাহায্য করে। চিকিৎসকদের উচিত, নিয়মিত দাঁতের পরীক্ষা এবং স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করা, দাঁতের ক্ষয় ও মাড়ির রোগের প্রাথমিক পর্যায়েই নির্ণয় ও চিকিত্সা করা। শুষ্ক মুখের সমস্যা সমাধানের জন্য বিকল্প উপায় বাতলে দেওয়া এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে কৃত্রিম লালা বা ফ্লোরাইড থেরাপির পরামর্শ দেওয়া।

দাঁত হারানো প্রবীণদের জন্য ডেঞ্চার, ব্রিজ বা ডেন্টাল ইমপ্ল্যান্টের মতো আধুনিক সমাধান সম্পর্কে জানানোর পাশাপাশি তাঁদের জন্য উপযুক্ত বিকল্প বেছে নিতে সাহায্য করা উচিত। ডেঞ্চার ব্যবহারকারীদের জন্য নিয়মিত পরীক্ষা এবং ডেঞ্চার পরিষ্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়ে সঠিক নির্দেশনা দেওয়াও জরুরি। এছাড়া প্রবীণদের পুষ্টি ও অন্যান্য স্বাস্থ্যগত অবস্থার সঙ্গে দাঁতের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন করা উচিত।

সর্বোপরি প্রবীণদের চিকিৎসকের কাছে যেতে উৎসাহিত করা এবং তাঁদের ভয় ও উদ্বেগকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা প্রয়োজন। দাঁতের চিকিৎসার খরচ এবং চিকিৎসার পদ্ধতি সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা দেওয়া তাঁদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করবে।

বার্ধক্যে দাঁতের চিকিৎসা শুধু মুখের সুস্থতাই নয়, ববং প্রবীণদের সামগ্রিক স্বাস্থ্য ও জীবনযাত্রার মান উন্নত করার জন্য অপরিহার্য। সরকার, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী এবং পরিবার সকলেরই উচিত, বার্ধক্যে দাঁতের স্বাস্থ্যের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেওয়া এবং প্রবীণদের জন্য সহজলভ্য ও মানসম্মত দাঁতের চিকিৎসা নিশ্চিত করা। এর মাধ্যমে আমরা প্রবীণ নাগরিকদের সুস্থ ও আনন্দময় বার্ধক্য উপহার দিতে পারব।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *