Demise sentence | নাবালিকাকে ধর্ষণের পরে খুন, দোষী সাব্যস্ত প্রতিবেশী তরুণকে ফাঁসির সাজা শোনাল আদালত

Demise sentence | নাবালিকাকে ধর্ষণের পরে খুন, দোষী সাব্যস্ত প্রতিবেশী তরুণকে ফাঁসির সাজা শোনাল আদালত

ব্যবসা-বাণিজ্যের /BUSINESS
Spread the love


জলপাইগুড়ি, ধূপগুড়িঃ নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় এক তরুণকে সর্বোচ্চ সাজা শোনাল জলপাইগুড়ি বিশেষ পকসো আদালত। বুধবার তরুণকে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছে বিচারক রিন্টু শূর। ২০২৩ সালে ধূপগুড়িতে প্রতিবেশি এক তরুণ নাবালিকাকে তাঁর নিজের বাড়িতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে খুন করে। খুনের পর নাবালিকার দেহটি বস্তাবন্দি করে ডুডুয়া নদীতে ভাসিয়ে দেয়। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে হরিপদ রায় নামে প্রতিবেশী এক তরুণকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরবর্তীতে নিজের দোষ স্বীকার করে হরিপদ। টানা দুই বছর জলপাইগুড়ি পকসো বিশেষ আদালতে মামলা চলার পর আজ তাকে ফাঁসির সাজা শোনায় বিচারক।

এদিন আদালতে সাজা ঘোষণার সময় উপস্থিত ছিলেন নাবালিকার পরিবারের সদস্যরা। আদালতের রায়ে খুশি নাবালিকার পরিবার। অন্যদিকে এদিন ফাঁসির সাজা জানতে যখন আদালতে হাজির নাবালিকার পরিবার এবং প্রতিবেশিদের একাংশ। সেই সময় বাড়ি ফাকা থাকায় কেউ বা কারা নাবালিকার বাড়ি লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়েছিল বলে অভিযোগ। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে যদি কাউকেই খুঁজে পায়নি। ধূপগুড়ি থানায় এই ঘটনার কোন লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে পরিস্থিতির ওপর পুলিশ নজর রাখছে।‘

এই মামলায় অভিযুক্ত হরিপদ এবং নাবালিকা একে অপরের প্রতিবেশী। সেই সূত্রে একে অপরের বাড়িতে যাতায়াত ছিল। এমনকী নাবালিকার বাড়িতে টিভি না থাকায় সে মাঝে মধ্যেই হরিপদর বাড়িতে যেত কার্টন দেখতে। ঘটনার দিন দুপুরে নাবালিকা তার নিজের বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর থেকে নিখোঁজ হয়ে যায়। রাতে নাবালিকার বাবা বাড়ি ফিরে এসে তাঁর স্ত্রীর কাছ থেকে জানতে পারে মেয়ে দুপুরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফিরে আসেনি। মেয়ের খোঁজে আত্মীয় পরিজন, প্রতিবেশীদের বাড়িতে খোঁজ চালানোর পাশাপাশি এলাকার পুকুরগুলোতেও তল্লাশি চালায় পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু মেয়ের কোনও খোঁজ না মেলায় শেষ পর্যন্ত সেই দিন রাতেই নাবালিকার পরিবারের ধূপগুড়ি থানায় নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করে।

অন্যদিকে ওই দিন দুপুরে নাবালিকার পরিবার জানতে পারে নাবালিকাকে জলের বোতল হাতে নিয়ে প্রতিবেশী তরুণ হরিপদ রায়ের বাড়িতে যেতে। একইভাবে নাবালিকার মা যখন সন্ধ্যা নাগাদ এলাকায় মেয়ের খোঁজ করছিলেন সেই সময় হরিপদকে দেখেছিলেন সাইকেলে একটা বস্তা চাপিয়ে রাস্তা দিয়ে যেতে। কিন্তু যেহেতু হরিপদ তাঁদের প্রতিবেশী এবং নিয়মিত বাড়িতে যাতায়াত রয়েছে,  সেকারণে তখন নাবালিকার মায়ের এতটুকুও সন্দেহ হয়নি। ঘটনার তিন দিন বাদে নাবালিকার বাড়ি থেকে প্রায় ২৫ কিলো মিটার দূরে ডুডুয়া নদীর পাড় থেকে পুলিশ বস্তা বন্দি মৃতদেহ উদ্ধার করে। জলপাইগুড়ি মর্গে মৃতদেহ পাঠানোর পর সেটা শনাক্ত করেন নাবালিকার বাবা মা।

এদিকে মৃতদেহের সঙ্গে যে বস্তাটি উদ্ধার হয় সেটি দেখে নাবালিকার মায়ের সন্দেহ হয়। তিনি পুলিশকে জানায় ঘটনার দিন হরিপদকে ওই বস্তাটি সাইকেলে করে নিয়ে যেতে দেখেছিলেন। এরপরেই পুলিশ প্রথমে হরিপদকে এই ঘটনার সন্দেহের তালিকায় এনে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হরিপদ স্বীকার করে নেয় তিনি নাবালিকাকে ধর্ষণের পর খুন করেছেন। অন্যদিকে নাবালিকার ময়নাতদন্তের রিপোর্টে আসে তাঁকে ধর্ষণের পর গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছিল। যে গামছা দিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়া হয়েছিল সেটিও মৃতদেহের সঙ্গে বস্তা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। একইভাবে সেইদিন যে জলের বোতলটি হাতে নিয়ে হরিপদর বাড়ির দিকে গিয়েছিল সেটিও অভিযুক্তর ঘরের খাটের নীচ থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এটি একটি নৃশংসভাবে খুনের ঘটনা বলে উল্লেখ করেছে জলপাইগুড়ি বিশেষ পকসো আদালত। সেই সঙ্গে আদালত মনে করছে ধর্ষণ খুনের পাশাপাশি তথ্য লোপাটের জন্য মৃতদেহ বস্তা বন্দি করে নদীতে ফেলে দিয়েছিল অভিযুক্ত। এই ঘটনাটি সম্পূর্ণ পরিকল্পনামাফিক বলে মনে করছে আদালত। যার ভিত্তিতে আদালত অভিযুক্তকে এই মামলার সর্বোচ্চ  সাজা মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে।

মামলায় সরকার পক্ষের আইনজীবী দেবাশীষ দত্ত বলেন, ‘এই মামলায় যে পথ দিয়ে হরিপদ বস্তা বন্দি মৃতদেহ নিয়ে গিয়েছিল সেই এলাকার বেশ কিছু সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ প্রমাণ হিসেবে পুলিশ আদালতে পেশ করেছিল। সেই সঙ্গে এই মামলায় ১৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে। আদালতে অভিযুক্তকে ফাঁসির সাজার নির্দেশ দিয়েছেন।‘ জেলা পুলিশ সুপার খান্ডবাহালে উমেশ গণপত বলেন, ‘এই মামলা তৎকালীন সময় তদন্তকারি অফিসার ছিলেন সুমিত মোক্তান। তিনি দক্ষতার সঙ্গে তদন্ত করে দ্রুত চার্জশিট প্রদান করেছিলেন। চলতি বছর এদিন পর্যন্ত জলপাইগুড়ি জেলায় পকসো, খুন, ধর্ষণ সহ ২৬টি মামলার সাজা ঘোষণা হয়েছে।‘



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *