বেলাকোবাঃ দুর্গা পুজোয় এবার প্রত্যেক পুজো কমিটিকে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা অনুদান ঘোষনা করেছে রাজ্য সরকার। এবার পুজো কমিটিগুলোর পাশাপাশি পুজোয় অনুদান দাবি করেছেন ডেকোরেটার শিল্পীরা। দুর্মূল্যের বাজারে নিজেদের পেশাকে টিকিয়ে রাখতে বাধা সৃষ্টি করছে অর্থ। এই পরিস্থিতিতে এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইছেন উত্তরবঙ্গের ডেকোরেটার শিল্পীরা।
নর্থবেঙ্গল ডেকোরেটারস অ্যাসোসিয়েশনের অধীনে উত্তরবঙ্গে এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত প্রায় ১৫ হাজার শিল্পী। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক গোপাল সরকার জানান, ২০১৮ সালে যেখানে দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে রাজ্য সরকার অনুদান দিত ১০ হাজার টাকা, সেটা বাড়তে বাড়তে ২০২৫ সালে দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। এছাড়াও ৮০ শতাংশ বিদ্যুতের মাশুল কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে চাঁদা ও বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছ থেকেও মোটা অংকের অর্থ আদায় হয় পুজো কমিটিগুলির। অথচ পুজোয় বড় ভূমিকা থাকে ডেকোরেটার্স শিল্পীদের। দুর্মূল্যের বাজারে ক্লাবগুলির কাছ থেকে ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না শিল্পীরা। এমনকী ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখতে ব্যাংক থেকেও তারা কোনওরকম ঋণ পান না। এই পরিস্থিতিতে বছরে ৩০-৩৫ হাজার টাকা রাজ্য সরকার অনুদান দিলে উপকৃত হতেন ডেকোরেটার্স শিল্পীরা।
গোপাল সরকার বলেন, “অর্থাভাবে অনেকেই এই পেশা থেকে সরে কেউ টোটো চালাচ্ছেন, আবার কেউ কেউ মুদি দোকান, সবজি বিক্রেতা হয়ে সংসার প্রতিপালন করছেন। আমরা চাই শিল্পীরের ব্যাংক থেকে স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হোক। বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ প্রশাসনের সর্বস্তরে একাধিকবার জানানো হয়েছে, তবুও সারা মেলেনি।”
নর্থবেঙ্গল ডেকোরেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের বেলাকোবা শাখার সভাপতি অলোক সরকার ও যুগ্ম সম্পাদক বাপি দাস বলেন, “শ্রমিকদের হাজিরা বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে শ্রমিকদের দৈনিক হাজিরা ছিল ৪৫০ টাকা বর্তমানে হয়েছে ৬০০ টাকা। এছাড়াও বাঁশ যেখানে ৬০ থেকে ৭০ টাকা ছিল, সেখানে ন্যূনতম দাম হয়েছে দেড়শ টাকা। পাশাপাশি বেড়েছে অন্যান্য যাবতীয় সামগ্রী। অথচ তাদের রেট বৃদ্ধি হচ্ছে না। কাজ না থাকলেও দুই তিন জন স্থায়ী শ্রমিককে বসিয়ে বেতন দিতে হচ্ছে। সরকারি কাজে টেন্ডার হলে তাদের জানানো হয় না। নিজেদের পছন্দের বড় ডেকোরেটার্সদের ডেকে কাজ দেওয়া হচ্ছে। আবার অনেকসময় কাজ করিয়ে চুক্তি অনুযায়ী টাকা দেওয়া হয় না। সব মিলিয়ে এই পেশাকে বাঁচিয়ে রাখাই আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।”