দার্জিলিংঃ চা বাগানের ৩০ শতাংশ জমি পর্যটনে ব্যবহার করার ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ঘোষণার তীব্র আপত্তি জানিয়েছিলেন জিটিএ চিফ অনিত থাপা। অনিত স্পষ্টত জানিয়ে দিয়েছিলেন, পর্যটনের নামে চা উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটবে তা মেনে নেবে না পাহাড়বাসী। তিনি চা বাগানের জমিতে কোনও পর্যটন শিল্প গড়তে দেবেন না। এবার একই ইস্যুতে পাহাড়ে আন্দোলন শুরু করলেন আইনজীবী তথা দার্জিলিং ডুয়ার্স চা শ্রমিক সুরক্ষা সমিতির সভানেত্রী বন্দনা রাই। তিনি চা পর্যটন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।
সম্প্রতি কলকাতায় বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন চা বাগানের ৩০ শতাংশ জমি ব্যবহার করা হবে পর্যটন শিল্পে। এই ঘোষণার পর থেকেই শোরগোল পড়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে। মমতার ঘোষণা নিয়ে ইতিমধ্যেই ক্ষোভ ছড়াতে শুরু করেছে উত্তরের চা বাগিচা মহলে। চা পর্যটন ইস্যুতে পাহাড়ে আন্দোলনে নেমেছে দার্জিলিং ডুয়ার্স চা শ্রমিক সুরক্ষা সমিতি। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার প্রতিবাদে ও প্রত্যাহারের দাবিতে শনিবার দার্জিলিংয়ের চৌরাস্তায় ধর্নায় বসেছেন সংগঠনের সভানেত্রী বন্দনা রাই।
কোনও প্রকার প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই দার্জিলিংয়ের চৌরাস্তায় ধর্না শুরু করেছেন বন্দনা। তিনি রবিবার পর্যন্ত চালিয়ে যাবেন এই ধর্না কর্মসূচি। এদিন তিনি বলেন, ‘পাহাড়-ডুয়ার্সের চা বাগানের জমি পর্যটনে ব্যবহার করা হলে ধ্বংস হবে পাহাড়ের সৌন্দর্য, পাহাড়ের সবুজ। কারণ চা বাগানের জমিতে গড়ে তোলা হবে কংক্রিটের রিসোর্ট বা হোমস্টে। কমে যাবে চায়ের উৎপাদন। কোনওভাবে এটা হতে দেওয়া যাবে না। যে কোনও প্রকারে রাজ্যের এই পরিকল্পনা আটকাতে হবে। এই প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার কেড়ে নিতে চাইছে চা শ্রমিকদের অধিকার। এর তীব্র বিরোধিতা করছি। অবিলম্বে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে চা পর্যটন সংক্রান্ত ঘোষণা প্রত্যাহার করতে হবে।’
চা পর্যটন সংক্রান্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদে সরব হয়েছে একাধিক চা শ্রমিক সংগঠন। বন্দনা রাই একাই নন, প্রতিবাদ জানিয়েছেন জিটিএ চিফ অনিত থাপা, দার্জিলিং সাংসদ রাজু বিস্ট। মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন তরাই সংগ্রামী চা শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যনিবাহী সভাপতি অভিজিৎ মজুমদার প্রমূখ।