ডালখোলাঃ স্ত্রীকে খুন করে আত্মঘাতী স্বামী। তবে কী কারণে দম্পত্তির এমন পরিণতি তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। রবিবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ খবর আসে ডালখোলা রেল গেটের কাছে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে অপরিচিত এক যুবক। দেহ শনাক্ত করে মৃতের বাড়িতে খবর দেওয়া হয়। এরপরেই সামনে আসে আরও একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য।
জানা গিয়েছে, আত্মঘাতী যুবকের নাম ধীরেণ বিশ্বাস (৩৬)। তাঁর স্ত্রীর নাম পূজা বিশ্বাস। দেহ শনাক্ত করে মৃতের শ্বশুর রেল লাইন সংলগ্ন বান্না এলাকার বাসিন্দা গোপাল রায় জানায়, মৃত যুবক তারই বড় মেয়ে পূজা বিশ্বাসের স্বামী। তিনি পুলিশের কাছে দাবি করেন, জামাই ধীরেণ তার মেয়ে পূজাকে ধারালো অস্ত্রের কোপ মেরে খুন করে তারপরই সে আত্মঘাতী হয়েছে।
মৃতের পরিবার সূত্রে খবর, ডালখোলা পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বান্না এলাকার বাসিন্দা গোপাল রায়ের মেয়ে পূজার সঙ্গে ৫ বছর আগে সামাজিক মতে বিয়ে হয় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বাসিন্দা ধীরেণ বিশ্বাসের। বর্তমানে তাঁদের চার বছরের মেয়েও রয়েছে। বিয়ের আগে থেকেই ধীরেণ পুণের এক রেস্তোরাঁতে কাজ করতেন। স্বামী ভিন রাজ্যে থাকার কারণে পূজা ডালখোলায় বাবার বাড়িতেই থাকতেন। মাঝে মধ্যে ধীরেণ ডালখোলায় স্ত্রী-মেয়ের কাছে আসতেন। সে মতই দিন কয়েক আগে ডালখোলায় শ্বশুর বাড়িতে এসেছিলেন। ধীরেণের শাশুড়ি বলেন, ‘একদিন রাতে মদ্যপ অবস্থায় পূজার সঙ্গে কোনও কারণে ঝামেলা হয় ধীরেণের। এমনকি সে সময় মেয়ের গলা টিপেও ধরেছিল। পরে ধীরেণকে বোঝানো হলে সে নিজের ভুল স্বীকার করে। তারপর সব ঠিকই ছিল। রবিবার সকালে মাংস কিনে নিয়ে এসেছিল। রোজকার মত আজ সকালে আমি লোকের বাড়িতে রান্নার কাজে গিয়েছিলাম সেখানেই খবর পাই আমার জামাই আমার মেয়েকে হত্যা করে বাড়ির পাশে রেল লাইনে আত্মহত্যা করেছে। ওদের চার বছরের মেয়ে ঘটনার সময় আমার মায়ের বাড়িতে ছিল। তবে কী কারণে ধীরেণ এমন ঘটনা ঘটালো তা বুঝে উঠতে পারছি না।’
এব্যাপারে পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার রাকেশ সরকার বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি পূজার রক্তাক্ত দেহ ঘরের মেঝেতে পরে রয়েছে। তার শরিরে একাধিক জায়গায় ধারালো অস্ত্রের কোপ। তবে কেন ওই দম্পতির এমন পরিণতি হল তা এখনও পরিষ্কার নয়।’
অন্য দিকে পুলিশ মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠিয়েছে। পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ডালখোলা থানার পুলিশ।