উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: বুধবার সুপ্রিম কোর্টে চলছে ডিএ মামলার শুনানি (DA Case in Supreme Court docket)। এদিন শুনানিতে শীর্ষ আদালতের কড়া ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় রাজ্য সরকারকে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, মহাজনদের মতো আচরণ করছে রাজ্য সরকার। টাকা জমিয়ে অন্য জায়গায় খাটানো হচ্ছে।
এদিন বিচারপতি সঞ্জয় কারোল ও বিচারপতি প্রশান্তকুমার মিশ্রের বেঞ্চে মামলার শুনানি শুরু হয়। প্রথমে সওয়াল করেন মামলাকারীদের আইনজীবী গোপাল সুব্রহ্মণ্যম। তিনি দাবি করেন, ‘দিল্লির বঙ্গভবন ও চেন্নাইয়ের ইউথ হস্টেলে রাজ্য সরকারের কর্মীদের ডিএ দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় হারে। অর্থাৎ তাঁদের ডিএ (DA) হিসাব করা হচ্ছে এআইপিসিআই অনুযায়ী। অথচ পশ্চিমবঙ্গে কর্মরত অন্য সরকারি কর্মচারীরা সেই হারে ডিএ পাচ্ছেন না।’ তারপরই মামলাকারীদের আইনজীবীর ব্যাখ্যা, ‘সব কর্মচারীর উপরই রিভাইজড পে অ্যান্ড অ্যালাওয়েন্স রুলস, ২০০৯ কার্যকর। তাই কাউকে বেশি ডিএ দেওয়া এবং কাউকে কম ডিএ দেওয়া বৈষম্যমূলক। এই বৈষম্য সমতার অধিকার (সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৪) লঙ্ঘন করে।’ এরপরই চাঞ্চল্যকর পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court docket)। উঠে আসে সুদের কারবারিদের প্রসঙ্গ।
মামলাকারীদের আইনজীবীর বক্তব্য শুনে বিচারপতি মিশ্রের পর্যবেক্ষণ, ‘মেথড একই। এরা পুরোনো দিনের সুদের কারবারিদের মতো টাকা বাঁচিয়ে অন্য কাজে লাগাচ্ছে।’ আইনজীবীর বক্তব্য শুনে বিচারপতি পিকে মিশ্র প্রশ্ন করেন, ‘আপনি আমাকে কি রাজ্য সরকারের এমন কোনও কর্মীর উদাহরণ দিতে পারেন, যিনি দিল্লির বঙ্গভবন বা চেন্নাইয়ের ইউথ হস্টেলে কাজ করেন এবং কেন্দ্রীয় হারে ডিএ পাচ্ছেন। একই কর্মী কলকাতায় কাজ করলে কম ডিএ পাচ্ছেন?’ সুব্রহ্মণ্যম বলেন, ‘নিশ্চয়ই। বঙ্গভবনে কাজ করলে যে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ মিলছে, সেই তথ্য দেওয়া হয়েছে সরকারি নথিতেই। অল ইন্ডিয়া কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স মেনে ২০০৮ সাল থেকে এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। রাজ্য সরকার বলছে, তারা জানে না কীভাবে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দিতে হবে। কিন্তু তা ঠিক নয়। কারণ রাজ্য দিল্লি এবং চেন্নাইয়ে কর্মরত সরকারি কর্মীদের কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দিচ্ছে। এটাকে ইনসিডেন্টাল ডিসক্রিমিনেশন বলা হবে নাকি অন্য কিছু? মনে রাখতে হবে ডিএ হলো ভ্যারিয়েবল অ্যালাউন্স।’ মামলাকারীদের পক্ষের আর এক আইনজীবী পিএস পাটোয়ালিয়াও ডিএ বন্ধ নিয়ে সওয়াল করেন সুপ্রিম কোর্টে। বকেয়া ডিএ কিস্তিতে দেওয়ার পক্ষেও সওয়াল করেন তিনি। পাটোয়ালিয়া বলেন, ‘বকেয়া ডিএ প্রয়োজনে কিস্তিতে দেওয়া হোক। আমরা তাতেও প্রস্তুত।’ শুনানি এখনও চলছে আদালতে।