উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: সম্প্রতি দেশে কমবয়সিদের মধ্যে আকস্মিক মৃত্যুর (Sudden deaths) প্রবণতা বেড়েছে। মূলত করোনা পরবর্তী সময়েই এই বিষয়টি বেশি নজরে এসেছে। ফলে অনেকেই দাবি করেছেন, কোভিড টিকা (Covid Vaccine) নেওয়ার পর থেকেই নাকি মৃত্যুর হার বেড়েছে। তবে আদতে কোভিড টিকার সঙ্গে কমবয়সিদের আকস্মিক মৃত্যুর কোনও যোগসূত্র নেই। সম্প্রতি ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (ICMR) ও ন্যাশনাল সেন্টার অফ ডিজিজ কন্ট্রোলের (NCDC) গবেষণায় এমনটাই উঠে এসেছে।
আর এই রিপোর্ট আসতেই বুধবার একটি বিবৃতি জারি করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক (Union Well being Ministry)। তাতে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, কোভিড টিকা নেওয়ার সঙ্গে কমবয়সিদের মধ্যে হৃদরোগের কোনও যোগসূত্র নেই।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ এবং ন্যাশনাল সেন্টার অফ ডিজিজ কন্ট্রোল বিশেষত ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সিদের ক্ষেত্রে আকস্মিক মৃত্যুর কারণ বোঝার জন্য গবেষণা চালাচ্ছিল। ২০২৩ সালের মে থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত ১৯টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৪৭টি তৃতীয় স্তরের হাসপাতালে এই গবেষণা চলেছিল। এই গবেষণায় জোর দেওয়া হয়েছিল সেই সব ব্যক্তিদের উপর, যাদের আপাতদৃষ্টিতে সুস্থ বলে মনে হলেও ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের মার্চের মধ্যে আচমকাই মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ গবেষণার পর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কমবয়সিদের মৃত্যুর সঙ্গে কোভিড টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কোনও যোগ মেলেনি।
একই বিষয় নিয়ে দ্বিতীয় গবেষণাটি আইসিএমআর-এর সহায়তায় চালিয়েছে দিল্লি এইমস। তাতেও উঠে এসেছে, কোভিড টিকা কমবয়সিদের মধ্যে আকস্মিক মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায় না। এই দুই গবেষণাতেই আচমকা হৃদরোগে মৃত্যুর কারণ হিসেবে অনিয়মিত জীবনযাত্রা, আগে থেকে থাকা শারীরিক সমস্যা, জিনগত ত্রুটি ও কোভিড-পরবর্তী জটিলতাকেই দায়ী করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, শুধুমাত্র গত মাসেই কর্ণাটকের হাসান জেলায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কমপক্ষে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরপরই কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া মন্তব্য করেন যে, রাজ্যে তরুণদের হঠাৎ মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির পেছনের কোভিডের টিকা দায়ী হতে পারে। এমনকি কোভিড-১৯ টিকার সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খতিয়ে দেখার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল গঠনেরও ঘোষণা করেছেন। এরপরই কোভিড টিকা সংক্রান্ত এই গবেষণা রিপোর্টটি পেশ করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। এই ধরনের ভিত্তিহীন দাবি কোভিড টিকা নিয়ে দেশের জনগণের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে বলে দাবি করা হয়েছে বিবৃতিতে।