Coochbehar | পুরোনো চাকরিতে ফিরতে চেয়ে নথি জমা শতাধিক শিক্ষকের

Coochbehar | পুরোনো চাকরিতে ফিরতে চেয়ে নথি জমা শতাধিক শিক্ষকের

শিক্ষা
Spread the love


গৌরহরি দাস, কোচবিহার : চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা চাইলে তাঁদের পুরোনো পেশায় ফিরে যেতে পারবেন। কিছুদিন আগে সুপ্রিম কোর্ট এমনই রায় দিয়েছিল। আদালতের সেই রায় মেনে নিয়ে পুরোনো পেশায় ফিরে যেতে কোচবিহার জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) দপ্তরে হিড়িক পড়ল। মঙ্গলবার বিকালে ডিআই অফিসের দোতলায় গিয়ে দেখা যায়, আবেদনপত্র জমা দিতে সেখানে শিক্ষক–শিক্ষিকাদের ভিড় উপচে পড়েছে। এদিন শতাধিক শিক্ষক–শিক্ষিকা আবেদন জমা দেন। কোচবিহার জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) সমরচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘পুরোনো পেশাতে ফিরে যেতে এদিন বিভিন্ন যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা তঁাদের আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন।’ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক দপ্তরের তরফে বৃহস্পতিবার এই সমস্ত আবেদনপত্র কলকাতায় জমা দেওয়া হবে।

মঙ্গলবার ডিআই অফিসে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন শিক্ষক-শিক্ষিকা আবেদনপত্র পূরণ করতে ব্যস্ত। আবার অনেকে ভিড় করে দাঁড়িয়ে আবেদনপত্র জমা দিচ্ছেন। কথোপকথনে বহু গল্পই উঠে এল। মাথাভাঙ্গার সাতগ্রাম কুর্শামারি হাইস্কুলের শিক্ষক সুদীপ্ত সাহু বললেন, ‘বাকুঁড়া জেলায় বাড়ি। আমি আগে পুরুলিয়ার মানবাজার ব্লকে বিসিডব্লিউতে ইনস্পেকটর ছিলাম। শিক্ষকতা ভালোবাসি। তাই আগের পেশা ছেড়ে এই কাজে যোগ দিই। কিন্তু এখানে যে এই পরিস্থিতির মুখে পড়তে হবে তা কখনোই ভাবতে পারিনি।’  সিতাই হাইস্কুলের ইংরেজির শিক্ষক কমলেন্দু বর্মন বলেন, ‘আগে কোচবিহারের হেড পোস্ট অফিসে চাকরি করতাম। কিন্তু শিক্ষকতার টানে এই পেশাতে আসি। এখন আবার পুরোনো পেশাতে যাবার জন্য আবেদনপত্র জমা দিচ্ছি। এছাড়া তো কোনও উপায় নেই। কারণ সংসার তো চালাতে হবে।’

সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সম্প্রতি রাজ্যের প্রায় ২৬ হাজার  শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মী চাকরিহারা হয়েছেন। এর মধ্যে কোচবিহার জেলায় শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মী মিলিয়ে মোট ৬৭৮ জন রয়েছেন। চাকরিহারাদের মধ্যে দুই শতাধিক শিক্ষাকর্মী রয়েছেন। বাকিরা শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন। পরে সুপ্রিম কোর্টের নতুন রায় অনুযায়ী এর মধ্যে নন–টেন্ডেন্ট অর্থাৎ যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলগুলিতে চাকরি করতে পারবেন এবং তাঁরা বেতনও পাবেন। কোচবিহারের সেই তালিকায় ৩৯৪ জন যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকার নাম রয়েছে। এঁদের একটা বড় অংশই পুরোনো চাকরিতে ফিরে যেতে চাইছেন।

দেওচড়াই হাইস্কুলের ফিজিক্যাল সায়েন্সের শিক্ষিকা জয়শ্রী শর্মাকে দেখা যায়, মন ভারাক্রান্ত অবস্থায় আবেদনপত্র জমা দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আগে খারিজা ফলিমারি এপি প্রাইমারি স্কুলে চাকরি করতাম। খুবই কষ্ট করে হাইস্কুলের চাকরি পেয়েছিলাম। সবই কপাল। খুবই খারাপ লাগছে। কিন্তু কোর্ট তিন মাসের মধ্যে আবেদন করতে বলেছে। তাই করছি। তবে রিভিউ করেছি।’ দিনহাটা গার্লস হাইস্কুলের জীবনবিজ্ঞানের শিক্ষিকা মুনমুন দত্ত আগে সিঙ্গিমারি জিপি প্রাইমারি স্কুলে চাকরি করতেন। এদিন তিনি  আবেদন জমা করলেও তার পরিষ্কার বক্তব্য, ‘কোনওভাবেই এই চাকরি ছেড়ে আগের কম স্কেলের চাকরিতে যাব না। আমরা রিভিউ করেছি। আশা করছি এতে কাজ হবে। কোনও কারণে রিভিউতে কাজ না হলে কিউরেটিভ পিটিশনে যাব। মোট কথা আমরা এর শেষ দেখে ছাড়ব।’ নাগুরুহাট হাইস্কুলের শিক্ষক অনুব্রত সাহা বললেন, ‘খারাপ লাগছে। কিন্তু কিছু করার নেই।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *