কোচবিহার: প্রয়াণ দিবসে অবহেলায়, অলক্ষে পড়ে রইল কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তি। কোচবিহার শহরের পুলিশ সুপারের দপ্তরের সামনে বিশ্বকবির একটি পূর্ণাবয়ব মূর্তি থাকলেও শুক্রবার, ২২শে শ্রাবণ সেখানে একটি মালাও পড়ল না। বিকেল গড়িয়ে সন্ধে পেরোলেও মূর্তিটি অবহেলিত থাকায় ক্ষোভের পারদ চড়েছে শহরবাসীর মধ্যে। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে পুলিশ সুপার এবং জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিদের ভূমিকা নিয়ে। এই বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কৃষ্ণগোপাল মিনাকে ফোন করা হলেও তাঁরা ফোন না তোলায় প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
প্রয়াণ দিবসে রবি ঠাকুরের উদ্দেশে শ্রদ্ধা না জানানোর ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আইনজীবী আনন্দজ্যোতি মজুমদার। তিনি বলেন, ‘এখন আমরা স্মরণ করি সোশ্যাল মিডিয়ায়। প্রকৃতপক্ষে যেখানে শ্রদ্ধা জানানো উচিত, সেখানে আর জানানো হয়ে ওঠে না। কোচবিহারের উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকরা বিভিন্ন সাংস্কৃতিক মঞ্চে উপস্থিত থাকেন। সেই জন্য তাঁদের আমি সম্মান করি। কিন্তু আজ দুঃখ পেলাম, ওঁদের দোরগোড়ায় থাকা রবি ঠাকুরের প্রতিকৃতির অবহেলার ছবি দেখে।’
পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘সব মহাপুরুষের জন্মদিনই পালন করা হয়। তবে, এদিন জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের আয়োজনে কবিগুরু স্মরণ অনুষ্ঠান হয় উৎসব অডিটোরিয়ামে।’ সেখানে অনুষ্ঠান হলেও কেন পুলিশ সুপারের দপ্তরের সামনে থাকা মূর্তিতে মালা পড়ল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
প্রতিবছরই শহরের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা মনীষীদের মূর্তি পরিষ্কার করেন সমাজসেবী শংকর রায়। এদিন তিনি রবীন্দ্র ভবনে থাকা রবি ঠাকুরের মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানান। পুলিশ সুপারের দপ্তরের সামনে থাকা মূর্তিতে শ্রদ্ধা না জানানোয় দুঃখ প্রকাশ করেছেন তিনিও। তাঁর কথায়, ‘পুলিশ আধিকারিক থেকে শুরু করে জেলায় এত জনপ্রতিনিধি আছেন, বিষয়টি কারও নজরে এল না? অনেকেই সন্ধ্যায় আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানিয়েছে। প্রশাসনের তৎপর থাকা উচিত ছিল।’
অপরদিকে, জেলার ঐতিহ্যবাহী জেনকিন্স স্কুলে রবীন্দ্রনাথের প্রয়াণ দিবস পালন করা হলেও জুতো পরে কবিকে শ্রদ্ধা জানাতে দেখা গেল একাধিক শিক্ষককে। বিষয়টি জানাজানি হতেই ক্ষুব্ধ সব মহল। বিদ্যালয়ের প্রাক্তনী আনন্দজ্যোতি মজুমদার বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরে খুব কষ্ট হল যে শিক্ষকরা জুতো পরে রবি ঠাকুরকে শ্রদ্ধা অর্পণ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের সজাগ থাকা উচিত ছিল।’ এবিষয়ে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক প্রিয়তোষ সরকার বলেন, ‘এমন হওয়ার কথা নয়।’