Cooch Behar | ২১ জন পড়ুয়ার মধ্যে উপস্থিত ৮! সরকারি প্রাথমিক স্কুল ধুঁকছে পরিকাঠামোর অভাবে 

Cooch Behar | ২১ জন পড়ুয়ার মধ্যে উপস্থিত ৮! সরকারি প্রাথমিক স্কুল ধুঁকছে পরিকাঠামোর অভাবে 

আন্তর্জাতিক INTERNATIONAL
Spread the love


কোচবিহার: রাস্তা দিয়ে যাবার সময় দূর থেকে দেখলে পরিত্যক্ত বাড়ি বলে মনে হবে মাঠজুড়ে বড় বড় ঘাস, ঝোপঝাড় হয়ে রয়েছে। মাঠে চড়ে বেড়াচ্ছে গোরু, বাছুর। তবে তা পরিত্যক্ত বাড়ি নয়, স্কুল। কতদিন সেই মাঠ পরিষ্কার হয় না, সেকথাও হয়তো ভুলতে বসেছে বিদ্যালয়ের পড়ুয়া থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সামনে গিয়ে দেখা গেল, স্কুলের সামনের দিকে শৌচালয় থাকলেও সেগুলির দরজা ভাঙা পড়ুয়াদের খেলাধুলার জন্য মাঠে একটি দোলনা রয়েছে। তবে তাতে বসার জায়গা নেই এই পরিস্থিতি শহরতলির বালাপাড়া খাগড়াবাড়ি স্পেশাল ক্যাডার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।

সেখানে প্রবেশের মূল গেট বন্ধ। রাস্তা দিয়ে নেমে একপাশের সরু গলি দিয়ে প্রবেশ করতে হয় বিদ্যালয়ে। বালাপাড়া এলাকায় থাকা এই বিদ্যালয়টিতে প্রিপ্রাইমারি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়ার সংখ্যা খাতায়কলমে মাত্র ২১ জন। আর শিক্ষকশিক্ষিকা রয়েছেন ৪ জন। বিদ্যালয়টিতে মাত্র একটি ঘর খোলা থাকলেও পড়ুয়ার অভাবে দীর্ঘদিন ধরেই তালাবন্ধ অবস্থায় রয়েছে বাকি শ্রেণিকক্ষগুলি। অভিযোগ, পড়ুয়ার অভাব থাকার সুযোগে মাঝেমধ্যেই পালা করে ডুবও মারেন শিক্ষকশিক্ষিকারা।

মঙ্গলবার স্কুলে গিয়ে দেখা গেল, একজন শিক্ষিকা টিচার্স রুমে বসেই দুজন পড়ুয়াকে পড়া বোঝাচ্ছিলেন। বাকি কয়েকজন ছাত্র তখন বিদ্যালয়ের মাঠে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিছুক্ষণ পরে স্কুলে থাকা শিক্ষিকার ফোন পেয়ে তড়িঘড়ি বিদ্যালয়ে আসেন আরেকজন শিক্ষিকা। তাঁর সাফাই, ‘পড়ুয়াদের অভিভাবকদের সচেতন করতে বাড়ি বাড়ি যেতে হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও সেভাবে কেউই আসছে না।’ মাসকয়েক ধরে এভাবেই চলছে বিদ্যালয়টি।

বিদ্যালয়টির এই পরিস্থিতির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন ডিপিএসসির চেয়ারম্যান রজত বর্মা। তিনি বলেন, ‘বিদ্যালয়টির বিষয়ে আমাদের নজর রয়েছে। এই বিদ্যালয়ের শিক্ষকশিক্ষিকাদের সম্বন্ধে আমার কাছে অভিযোগ এসেছে। আমি নিজেও বার পরিদর্শনে গিয়েছিলাম যা অবস্থায় রয়েছে তা উপযুক্ত বিদ্যালয়ের পরিবেশ নয়। ওঁদের আমি বলেছি। এরপর ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আমি পদক্ষেপ করব

বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকা জানিয়েছেন, ২০১১ সালেও এই বিদ্যালয়ে ১১৬ জন পড়ুয়া ছিল। কমতে কমতে এখন তা খাতায়-কলমে এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র ২১ জনে। এদিন বিদ্যালয়ে মাত্র ৮ জন পড়ুয়া এসেছে। অন্যদিকে বাড়িতে বসেই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পুলক আচার্যর বক্তব্য, ‘দিন-দিন স্কুলে ছাত্রসংখ্যা কমছে। সেজন্য আপাতত কয়েকটি ঘর বন্ধ রাখা হয়েছে। বিদ্যালয়ে বেঞ্চের অভাব রয়েছে। মাঠটি গরমের ছুটির পর পরিষ্কার করা হলেও আবার একই অবস্থা। সমস্ত বিষয়ে ডিপিএসসির চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে।’

বিদ্যালয়ে খোলা থাকা শ্রেণিকক্ষটিতে মাত্র তিনটি বেঞ্চ রয়েছে। ভাঙা অবস্থায় ঝুলছে ঘরের সিলিং। ফ্যান থাকলেও সেগুলি চলে না। পানীয় জলের ব্যবস্থাও নেই। মিডডে মিলের ঘরে একটিমাত্র টিউবওয়েল রয়েছে। ফলে এই গরমে দিনদিন উপস্থিতির হার কমছে পড়ুয়াদের। স্কুলটির জানলা, দরজার অধিকাংশই বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। একপাশে গ্রিলের অর্ধেকাংশ ভেঙে ঝুলে রয়েছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষকশিক্ষিকাদের অভিযোগ, সীমানা প্রাচীর না থাকায় সন্ধ্যা নামতেই অসামাজিক কাজকর্ম হচ্ছে স্কুল চত্বরে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *