কোচবিহার: তিনি কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান। অথচ তাঁর ডাকে সাড়া দিচ্ছেন না দলেরই কাউন্সিলাররা। এর আগে পুরসভার বিভিন্ন কর্মসূচিতে চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষের আহ্বান সত্ত্বেও তৃণমূলের কাউন্সিলারদের দেখা মেলেনি। বুধবার পুরসভার একটি গেটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছিল। এদিন পুরসভায় দলের ১৮ জন কাউন্সিলারের মধ্যে ১০ জন কাউন্সিলারই অনুপস্থিত ছিলেন।
এমন ঘটনা কিন্তু নতুন নয়। প্রতিবারই পুরসভার বিভিন্ন কর্মসূচির আগে সেই অনুষ্ঠানে আসার জন্য পুরসভার কাউন্সিলারদের চিঠি দিচ্ছেন রবি। কিন্তু তারপরেও কর্মসূচিগুলিতে দলের অধিকাংশ কাউন্সিলারই গরহাজির থাকছেন। দলেরই জনপ্রতিনিধিরা রবির বিরুদ্ধে তোপ দাগছেন। এই তো, দু’দিন আগেই পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান ভূষণ সিং সবার সামনেই বলেছিলেন, রবি নাকি গত পুরসভা নির্বাচনে ছাপ্পা ভোট করিয়ে জিতেছিলেন। এদিন অবশ্য সেই ভূষণকে দেখা গিয়েছিল পুরসভার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। রবির হাত ধরে এদিন ভূষণকে আবার হাসিমুখে হাঁটতেও দেখা গিয়েছে। ফলে কোচবিহার শহরের রাজনীতিতে বর্তমানে কখন কোন সমীকরণ চলছে, তা নিয়েই তুমুল চর্চা ঘাসফুল শিবিরের অন্দরে।
এদিনের অনুষ্ঠানে দলের অধিকাংশ কাউন্সিলারের অনুপস্থিতির কারণ জানতে চাওয়া হয়েছিল চেয়ারম্যানের কাছে। রবির সাফাই, ‘কাউন্সিলাররা অনেকেই কাজে ব্যস্ত থাকেন। কয়েকজন আমাকে ফোন করেও জানিয়েছেন সেকথা। মিটিংয়ে আসতে না পারলেও তাঁরা পরে আসছেন। যে যখন পারছেন আসছেন। যার যার কাজ করে নিয়ে যাচ্ছেন।’
রবির কথাতেই তো স্পষ্ট যে জনপ্রতিনিধিরা যখন খুশি আসছেন। তাহলে কী দলের কাউন্সিলারদের ওপর চেয়ারম্যানের আর কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই? সেকথা অবশ্য মানতে চাইছেন না রবি। গোষ্ঠীকোন্দলের প্রসঙ্গ তো উড়িয়েই দিয়েছেন। এদিন রবি ছাড়া ভাইস চেয়ারপার্সন আমিনা আহমেদ সহ চন্দনা মোহন্ত, মোস্তাক আমেদ প্রমুখ কাউন্সিলার উপস্থিত ছিলেন। রবি চেষ্টা করছেন ড্যামেজ কন্টোলের। তাই তো এদিন ভূষণের সঙ্গে হাসিমুখেই ছিলেন তিনি। রবি বলেন, ‘ভূষণ সিং আমার পুেরানো বন্ধু। বহু বছর একসঙ্গে কাজ করেছি। কখনো-কখনো কোনও ভুল বোঝাবুঝি হয়ে যায়। পরে যখন ওরা বুঝতে পারে, তখন আবার তারা সঠিক অবস্থানে চলে আসে।’
আর ভূষণও বলছেন বন্ধুত্বের কথা। বলেন, ‘রবি আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু। ক্ষোভ থাকলে কিছু বলি। মতান্তর হতে পারে। তাই বলে এই নয় যে ওকে দেখলে আমি মারব বা ও আমাকে দেখলে মারবে।’ এদিকে, বারবার চেয়ারম্যানের ডাক উপেক্ষা করার এই প্রবণতা আসলে কোচবিহার পুরসভার অন্দরে অনাস্থার ইঙ্গিত কি না, সেই চর্চায় সরগরম স্থানীয় রাজনৈতিক মহল।