নিশিগঞ্জ ও পারডুবি: টপাটপ ফুচকা খাচ্ছেন এসএসবি জওয়ানরা। আরও হরেক রকম খাবারে মজে তাঁরা। তবে জিভে জল আনা এই ফুচকা সহ ১৪ রকমের নানা স্বাদের পদ তৈরি হয়েছে মিলেট দিয়ে।
বাজরা ও কাউনের এত গুণ! সোমবার মাথাভাঙ্গা-২ ব্লকের পারডুবি পঞ্চায়েতের হিন্দুস্তান মোড়ে এসএসবি’র ৩৪ নম্বর ব্যাটালিয়নের হেড কোয়ার্টারে মিলেট খাদ্যমেলায় না এলে এমন অভিজ্ঞতা হতই না। এসএসবি জওয়ানদের স্টলে ‘মিলেটের তৈরি ফুচকা’ এক নিমেষে ভ্যানিশ হয়ে গেল। সারা বছর ভারত-ভুটান সীমান্ত রক্ষার কাজ করেন এসএসবি’র ৩৪ নম্বর ব্যাটালিয়নের জওয়ানরা। স্বাদে-গুণে এদিন মিলেটের প্রশংসায় মজতে দেখা গেল সেই জওয়ান ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদেরই।
এদিন দুপুরে প্রদীপ জ্বালিয়ে মিলেট খাদ্য উৎসবের উদ্বোধন করেন কমান্ডান্ট মনোজকুমার চাঁদ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উপ কমান্ডান্ট রাজীব রানা সহ এসএসবি’র আধিকারিকরা। কমান্ডান্ট মনোজের কথায়, ‘এই উৎসবটির উদ্দেশ্য হল পুষ্টিকর শস্য যেমন মিলেট দিয়ে তৈরি খাবার ও স্বাস্থ্য সম্পর্কে সকলের মধ্যে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়া।’ এদিন খাদ্য উৎসবে নানা ধরনের ঐতিহ্যবাহী ও উদ্ভাবনী খাবারের প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। তালিকায় ছিল মিলেটের রুটি, খিচুড়ি, হালুয়া, সিঙ্গাড়া, পুডিং, লাড্ডুর মতো খাবার।
ভারত সরকারের অনুরোধে রাষ্ট্রসংঘ ২০২৩ সালকে আন্তর্জাতিক মিলেট বর্ষ হিসাবে ঘোষণা করে। আর তারপরেই এককালে গরিবের খাদ্য মিলেট দেশের কৃষি ও পুষ্টি গবেষকদের মধ্যে শোরগোল ফেলে দেয়। মিলেটের দুটি রূপ বাজরা ও কাউন চাষেও জোর দেয় সরকার। পুষ্টিবিদরা কাউন চালকে ‘সুপার ফুড’ হিসাবে আখ্যা দিয়েছেন। কোচবিহার কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের বিজ্ঞানী বিকাশ রায়ের কথায়, ‘গুণের জন্যই স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ কাউন বা মিলেট জাতীয় খাদ্যের দিকে ঝুঁকছেন। ছোট দানাযুক্ত কাউন চালে রয়েছে প্রোটিন, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সহ আরও অনেক পুষ্টিগুণ।’ তবে শুধু পুষ্টিগুণের জন্যই নয়, খরাপ্রবণ এলাকাতে মিলেট চাষ সহজ বলেও এর গুরুত্ব রয়েছে। শস্য বিজ্ঞানী বিপ্লব মিত্র বলেন, ‘দেশে খরার প্রবণতা বাড়ায় এখন মিলেট চাষের গুরুত্ব বাড়ছে।’
খাদ্যমেলায় এসে এসএসবি জওয়ানদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও মিলেটের রকমারি পদের স্বাদ নেন। মিলেট জাতীয় খাবার সহজপাচ্য ও পুষ্টিতে ভরপুর। জওয়ানদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় মিলেটের গুরুত্ব তুলে ধরতেই এদিন ব্যতিক্রমী খাদ্যমেলার আয়োজন করা হয় বলে দাবি করেন এসএসবি’র আধিকারিকরা।