দিনহাটা: চৈত্র মাস মানেই সেলের মাস। বিশেষ করে হিসেবি গৃহিণীদের জন্য সাশ্রয়ী কেনাকাটার সেরা সময়। সঠিক পরিকল্পনা ও সচেতনতার সঙ্গে কেনাকাটা করলে অনেকটাই সাশ্রয় হয়ে থাকে। তাতে বছরে সংসারের বাজেটে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফেরে। আর তাই চৈত্র সেল শুরু হতেই দিনহাটার বাজার গিন্নিদের ঢুঁ মারা শুরু হয়ে গিয়েছে। কেউবা ঘরের সব সময়ের পর্দা খোঁজ করছেন, তো কেউ আবার সবসময়ে পড়ার শাড়ি। কেউ আবার ঘরের নিত্যপ্রয়োজনীয় বাসনপত্রও খোঁজ করতে ভুলছেন না। তবে সেলের জিনিস টেকসই কি না, এবং কতটা সাশ্রয় তা দেখতে গিয়ে অনেকেই হয়ে যাচ্ছেন গোয়েন্দা গিন্নি।
রবিবার ছুটির দিন গৃহবধূ সমর্পিতা দে বেরিয়েছিলেন দিনহাটার চওড়হাট বাজারে। সেখানে প্রতি বছর চৈত্র সেলে একাধিক জামাকাপড়ের দোকান বসে। ঠিক তেমনি রংপুর রোডের একাংশেও বহু দোকান দেখা যায় চৈত্র সেল উপলক্ষ্যে। তবে শপিং মলের জন্য সেই দোকানের সংখ্যা কমেছে ঠিকই কিন্তু আজও কিছু ব্যবসায়ী সেই ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন। সমর্পিতার কথায়, ‘শপিং মলে ডিসকাউন্ট রয়েছে ঠিকই কিন্তু সেখানে অনেক শর্তও থাকে। তবে ফুটপাথে থাকা দোকানের ক্ষেত্রে সেসব নেই। তাই একটু দামাদামি করতে পারলেই আপনার সাশ্রয় হয়ে যাবে। আর সে কারণেই সারা মাসে কেনাকাটা করার মাঝে প্রতিবছর চৈত্র সেলে নিয়ম করে কেনাকাটা করি। তবে চৈত্র সেলের বাজারে কোন সামগ্রী কেনা সাশ্রয়ী, তার উত্তরে সমর্পিতার কথায় ঘরের পর্দা, বাড়ির ছোটদের জামাকাপড়, সোফার কভার, বিছানায় পাতার চাদর সহ বেশ কিছু জিনিস এসময়ে বেশ কম দামে মেলে।
তবে শুধুই কী আর জামাকাপড়, প্রতিবছর চৈত্র সেলে নিত্য প্রয়োজনীয় বাসনের সেল দিতে দেখা যায়। এবছরও তার ব্যতিক্রম নয়, চওড়াহাট বাজারে দেখা গেল বাসনের পসরা নিয়ে বসেছেন বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী। এদিন বাসন নিতে আসা গৃহবধূ নিরুপমা দাসের কথায় প্রয়োজনের শেষ নেই। তাই কেনাকাটারও শেষ নেই, বিশেষ করে চৈত্র সেল শুরু হলে একটা মোহ সবসময় কাজ করে। তাই বিকেল হলেই চওড়াহাট বাজারের দিকে যেন টানে। এদিনও সেই অভ্যাসের বশে আসা। তবে কেনই বা সস্তায় বাসন মিলছে? তার উত্তরে নিরুপমার বক্তব্য, এক্ষেত্রে দেখা যায় কোনও সময় ডিজাইনটি বর্তমানে আর চলে না, বা কোথাও একটু ট্যাপ খেয়েছে সেগুলোই বিক্রেতারা বিক্রি করছেন কম দামে। তবে সব সময়ের ব্যবহারের জন্য এর থেকে ভালো আর কি বা হতে পারে।
তবে চৈত্র সেল নিয়ে এবছর অনেকটাই হতাশ ফুটপাথ ব্যবসায়ী অলোক রায়। মূলত বছরের অন্যান্য সময় অন্য ব্যবসা করলেও বছরের এই দিনগুলিতে ভ্যানে করে জামা কাপড় নিয়ে শহরের ফুটপাথে বসেন। লক্ষ একটাই কিছু অতিরিক্ত মুনাফা। তবে অলোকের কথায় যেভাবে ছোট্ট শহরে একের পর এক শপিং মলের আউটলেট তৈরি হচ্ছে তাতে আগের মতো চৈত্র সেলের বাজার নেই। তবে চৈত্র মাসের শেষ দশদিন ভালো ব্যবসা হবে বলেই আশাবাদী।