কোচবিহার: বাজারে আনাজপাতির দাম কিছুটা কম হলেও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম হঠাৎ বেড়েছে। এর জেরে সাধারণ মধ্যবিত্তের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। কোচবিহার শহরের পাইকারি ও খুচরো ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, একে বর্ষাকাল। তার ওপর ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত খুলতেই নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম বেড়েছে। কবে দাম নাগালে আসবে তা নিয়ে চিন্তিত শহরবাসী। কোচবিহার শহরের বাদুড়বাগান এলাকার চালের খুচরো ও পাইকারি ব্যবসায়ী মুক্তা কুণ্ডু বলেন, ‘বাংলাদেশের সীমান্ত খুলতেই চালের দাম কিছুটা বেড়েছে। চাল বাইরে যাওয়ার কারণে বস্তা প্রতি ৫০-৬০ টাকা করে দামে হেরফের হয়েছে।’
মঙ্গলবার কোচবিহার বড়বাজারের বিভিন্ন ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, ১০ দিন আগে কাটারিভোগ চাল বস্তাপ্রতি ১ হাজার ৯০ টাকা করে বিক্রি হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে তা ১ হাজার ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মোটা চাল বস্তাপ্রতি ৮০০ টাকা ছিল। এখন সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৫০ টাকা। শুধু যে পাইকারিতে দাম বেড়েছে তা নয়। খোলা বাজারেও চালের দাম বেড়েছে। মিনিকেট চাল খোলা বাজারে প্রতি কেজি ৪০ টাকা করে বিক্রি হত। বর্তমানে তা কেজিপ্রতি ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কয়েকসপ্তাহ আগে রানিপরি চাল ২৮-৩০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাচ্ছিল। বর্তমানে তা বেড়ে প্রতি কেজি ৩৫ টাকা হয়েছে। কাটারিভোগ চালও ৪২ টাকা থেকে বেড়ে ৫০ টাকা হয়েছে। পাইকারি চাল বিক্রেতা দিলীপকুমার বানিয়ার কথায়, ‘এবছর ধানের দাম কিছুটা বেশি। তাছাড়া বর্ষাকাল চলছে। তবে যথেষ্ট পরিমাণে চাল মজুত রয়েছে। আশা করছি কয়েকদিনের মধ্যে দাম স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’
তবে শুধু চাল নয়। কেজিপ্রতি ডাল ও তেলেরও দাম বেড়েছে। মশুর ডাল ১০ দিন আগেও প্রতি কেজি ১১০ টাকা ছিল। এখন তা ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মুগ ডাল ১২০ টাকা থেকে বেড়ে কেজিপ্রতি ১৩০ টাকা হয়েছে। কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে অড়হর ডালের দাম ১৪৫ টাকা হয়েছে। জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুরজকুমার ঘোষের বক্তব্য, ‘বাইরের রাজ্যে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। রাস্তাঘাটে জল জমে যাওয়ায় বাইরে থেকে সহজে জিনিসপত্র আসছে না। তাছাড়া জোগানের তুলনায় চাহিদা বেশি থাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কিছুটা বেড়েছে।’
এদিকে সর্ষের তেল কয়েকদিন আগে লিটারপ্রতি ১৬০-১৭০ টাকা ছিল। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮০-২০০ টাকা। রিফাইন্ড তেলের দামেও হেরফের হয়েছে। প্যাকেটপ্রতি রিফাইন্ড তেল ১০০-১২০ টাকায় পাওয়া গেলেও এখন তা ১২০-১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরো ব্যবসায়ী রাজেশ গুপ্তার মন্তব্য, ‘বর্ষাকালে পরিবহণ খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিবার দামে কিছুটা হেরফের হয়। তাছাড়া পাইকারি বাজারে দাম বাড়ায় আমরাও কিছুটা দাম বাড়িয়েছি।’ একই বক্তব্য দেশবন্ধু মার্কেটের খুচরো বিক্রেতা নারায়ণচন্দ্র দেবের।