তুফানগঞ্জ: পুজোর আগে তুফানগঞ্জ মহকুমাজুড়ে ক্রমশই জ্বর ও সর্দির প্রকোপ বাড়ছে। গ্রাম থেকে শহর কোনও এলাকাই বাদ পড়ছে না। প্রতিদিনই তুফানগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগীরা ভিড় জমাচ্ছেন। সম্প্রতি হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বহির্বিভাগ থেকে দৈনিক প্রায় ৩০০০টি করে প্যারাসিটামল দেওয়া হচ্ছে। যদিও এব্যাপারে আতঙ্কিত হতে বারণ করছেন চিকিৎসকরা। তুফানগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালের সুপার মৃণালকান্তি অধিকারীর বক্তব্য, ‘বর্তমানে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে। বহির্বিভাগে আসা রোগীদের প্রায় ১২ শতাংশই মরশুমি জ্বর নিয়ে আসছে। রোগ বুঝে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। তবে ভয়ের কিছু নেই।’ বৃহস্পতিবার সকালেও মহকুমা হাসপাতালে গিয়ে রোগীদের লম্বা লাইন দেখা গেল। তার মধ্যে শিশু থেকে বয়স্ক সকলেই আছে।
নাককাটিগাছ এলাকার এক বাসিন্দা তামান্না বিবি তিন বছরের শিশুকন্যাকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন। তিনি বললেন, ‘তিনদিন ধরে মেয়ের জ্বর না কমায় আতঙ্কিত হয়ে হাসপাতালে এসেছি। এদিন হাসপাতালে এসে দেখি প্রচুর রোগী ওই একই সমস্যা নিয়ে ভিড় করেছেন। ডাক্তার বেশকিছু ওষুধও লিখে দিয়েছেন। আশ্বাস দিয়েছেন, ভয়ের কিছু নেই।’ এদিকে, অন্দরান ফুলবাড়ি ১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার আরেক বাসিন্দা সুমিত দাসও জ্বরে পড়েছে। তার পরিবারের এক সদস্য অমিত বর্মন জানালেন, বাইরে থেকে ওষুধ কিনে খাওয়ার পরেও ভাইপোর জ্বর কমছে না। তাই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হাসপাতালে আসতে হল। ডাক্তার রক্ত পরীক্ষার পাশাপাশি প্যারাসিটামল দিয়েছেন।
শহর বা শহরের বাইরে থেকে রোগীরা এসে শুধু হাসপাতালেই নয়, বেসরকারি চেম্বারেও ভিড় করছেন। বালাভূত, বক্সিরহাট, চিলাখানা, ধলপল প্রভৃতি জায়গা থেকে রোগীরা আসছেন। শরতের শুরুতে জ্বরের প্রকোপ বাড়ে। এব্যাপারে তুফানগঞ্জের এক চিকিৎসক সাধনচন্দ্র সেনের কথায়, ‘বর্তমানে চেম্বারে আসা প্রায় ৬৫ শতাংশ রোগীই ভাইরাল ফিভারে আক্রান্ত। আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে এই জ্বরের উপদ্রব বাড়ছে। প্রথম দু-একদিন গা, হাত-পা ব্যথা করবে। প্রচণ্ড জ্বর ওঠার পর প্যারাসিটামল খেলে জ্বর কমে। তবে কিছুক্ষণ গেলে আবার জ্বর আসছে। প্রথমদিকে রক্তের ভাইরেমিয়া একটু বেশি পরিমাণ থাকে। আর সেকারণে প্যারাসিটামল খেলেও একটু সময় লাগে। তবে দু-একদিনে শরীরে ইমিউনিটি বেড়ে গেলে রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন।’ এক্ষেত্রে রোগীকে হাইড্রেটেড রাখার জন্য অবশ্যই পর্যাপ্ত জল খেতে হবে। তবে কাঁপুনি সহ জ্বর থাকলে রোগীদের উচিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।