কোচবিহার: কেশব রোড সংলগ্ন রাজবাড়ির সামনের রাস্তাটি অলিখিত টোটোস্ট্যান্ডে পরিণত হয়েছে। রবিবার সেখানে গিয়ে দেখা গেল, লাইন করে কয়েকটি টোটো রাখা হয়েছে। আর তার ঠিক সামনেই ট্রাফিক পুলিশ দাঁড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু টোটোচালকদের সেখান থেকে সরানো তো দূরের কথা, তাঁদের কাউকেই সেভাবে ‘মুখ খরচ’ করতেও দেখা গেল না। শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পুলিশের উদাসীনতা কিন্তু নতুন কোনও ঘটনা নয়। প্রশাসনের হেলদোল নেই কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
যদিও ট্রাফিক ওসি (সদর) সুরেশ দাসের দাবি, ‘হেরিটেজ স্থাপত্যের সামনে টোটো দাঁড় করিয়ে রাখায় আমরা তাদের জরিমানা করছি। প্রতিদিনই আমাদের অভিযান চলছে।’
প্রতিদিনই রাজবাড়ির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পর্যটকরা আসেন। অধিকাংশ পর্যটকই রাজবাড়ির মূল গেটের সামনে দাঁড়িয়ে গেট সহ রাজবাড়ির ছবি তোলেন। কিন্তু রাস্তায় টোটোর লাইন থাকায় তাঁরা সেই সুযোগ পাচ্ছেন না। বিষয়টি নিয়ে হেরিটেজ কমিটির সদস্য তথা কোচবিহার আর্কাইভের সভাপতি ঋষিকল্প পালের বক্তব্য, ‘রাজবাড়ির সামনে টোটো দাঁড়িয়ে থাকায় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। এবিষয়ে বিকল্প কোনও ভাবনা গ্রহণ করা উচিত। যাতে টোটোচালকদেরও সমস্যা না হয় এবং রাজবাড়ির সৌন্দর্যও বিঘ্নিত না হয়।’
এদিন অসম থেকে বাবাই দাস রাজবাড়ি ঘুরতে এসেছিলেন। রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে না পেরে তিনি একপ্রকার ক্ষোভের সুরেই বললেন, ‘ভেবেছিলাম বাড়িতে গিয়ে পরিবারের লোকেদের রাজবাড়ির ছবি দেখাব। কিন্তু রাস্তার ধারে এত টোটো দাঁড়িয়ে থাকায় ছবি আর নেওয়া হল না।’
শুধু রাজবাড়ির গেটের সামনেই নয়। এমজেএন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের গেটের সামনেও সারাদিন টোটোচালকদের একাংশকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এতে হাসপাতালে অ্যাম্বুল্যান্স ঢোকাতে এবং বের করতে গিয়ে চালকদের সমস্যায় পড়তে হয়। এদিকে, নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে কেশব রোড, বাজার সহ নো পার্কিং জোনগুলিতেও টোটোর ভিড়। ফলে এই গুরত্বপূর্ণ রাস্তার যানজটে আটকে স্থানীয় বাসিন্দাদের হাঁসফাঁস অবস্থা। সবকিছু দেখেও যেন চোখ বন্ধ ট্রাফিক পুলিশের।
এ নিয়ে কোচবিহার জেলা ই-রিকশা টোটো শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক গগন গোস্বামী বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। এবিষয়ে জেনে আমি টোটোচালকদের সঙ্গে কথা বলব।’
এবিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শহরের বাসিন্দা সুব্রত ঘোষ। তাঁর প্রশ্ন, ‘শহরে টোটোর দৌরাত্ম্য বেড়ে চলেছে। প্রশাসনের উচিতে এবিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া।’