কোচবিহার: চাকরি দেওয়ার নাম করে ৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি চাকরিপ্রার্থীকে ধর্ষণের (Rape) অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তৃণমূলের (TMC) অঞ্চল সভাপতির দিকে। অভিযুক্ত এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা বলেই পরিচিত। ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিনহাটার (Dinhata) বড় আটিয়াবাড়ি ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় তুমুল চাঞ্চল্য ছড়ায় মার্চ মাসে। পরবর্তীতে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল অভিযুক্ত তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতিকে। দীর্ঘ প্রায় দেড়মাস পর এই ঘটনায় কড়া নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
ঘটনার পর নির্যাতিতা দিনহাটা মহিলা থানায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। পরবর্তীতে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য ওই মহিলাকে মারধর করেন অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার ঘনিষ্ঠরা। বাধ্য হয়ে নির্যাতিতা পুলিশি নিরাপত্তার আবেদন জানিয়ে উচ্চ আদালতের (Calcutta Excessive Courtroom) দ্বারস্থ হন। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে এই মামলার শুনানি ছিল। সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি সিনহা কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন, অবিলম্বে নির্যাতিতাকে পুলিশি নিরাপত্তা দিতে হবে। যাতে তাঁর ওপর কোনওরকম শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করা না হয়। পাশাপাশি তিনি আরও জনিয়েছেন, নির্যাতিতার বিরুদ্ধে অভিযুক্তের পরিবার যে এফআইআর (FIR) দায়ের করেছেন, তা আদালতের পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে না। যদিও পরবর্তী শুনানির দিন এখনও জানানো হয়নি।
উল্লেখ্য, তৃণমূলের (TMC) বড় আটিয়াবাড়ি ২ নং অঞ্চল সভাপতি আব্দুল মান্নানকে এলাকার এক ব্যক্তি ৫ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন তার মেয়ের প্রাথমিকে চাকরি করে দেওয়ার জন্য। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর চাকরি না হওয়ায় টাকা ফেরত চাইতে গেলে নানান টালবাহানা শুরু করেন আব্দুল মান্নান। এমনকি ওই মহিলাকে হুমকিও দেওয়া হয়। গত ১৪ই মার্চ চাকরির ইন্টারভিউ রয়েছে বলে তাকে দিনহাটার বাবার বাড়ি থেকে তৃণমূল নেতা গাড়িতে করে একটি ফাঁকা বাড়িতে নিয়ে যান বলে অভিযোগ। সেখানে ভয় দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করার পর এবং তার নগ্ন ছবি ও ভিডিও তুলে রাখা হয়। টাকা ফেরত চাইলে তার নগ্ন ছবি প্রকাশ করে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেয় অভিযুক্ত। ধর্ষণের পর নির্যাতিতাকে মদ খাওয়ার জন্য জোর করে ওই তৃণমূল নেতা। মদ খেতে না চাইলে তার মাথায় মদের বোতল দিয়ে আঘাতও করে অভিযুক্ত। এরপরই যুবতীর চিৎকার শুনে আশপাশের লোকেরা এসে তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে। এরপর দিনহাটা মহিলা থানায় (Police Station) তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও চাকরির নামে টাকা নেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতা ও তাঁর বাবা। অভিযোগ দায়ের হতেই অভিযুক্ত পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। যদিও অভিযুক্ত তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি আব্দুল মান্নান জানিয়েছিলন, পুরোটাই চক্রান্ত।